“হামাসের মুখপত্র” – এই অভিযোগ এনে ইজরায়েলে বন্ধ করে দেওয়া হল আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার। এর আগে ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, মন্ত্রীসভা এই চ্যানেল বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করেছে।
কাতার থেকে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করার আগে রবিবার ইজরায়েলের জেরুজালেমে অ্যাম্বাসেডর হোটেলে সংবাদমাধ্যমটির অফিসে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ইজরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রী শোলমো কারহি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) এই তল্লাশি অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করেন। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, বিবিসির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তাদের হোটেলের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
আল জাজিরার সম্প্রসারণ বন্ধের বিষয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ইজরায়েলই স্যাটেলাইট সার্ভিস ইয়েস এই বিষয়ে এক বার্তা প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশ অনুসারে ইজরায়েলে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে।
ইজরায়েলে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ জারির পর একাধিক সংবাদ মাধ্যম সংগঠন এবং মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে।
দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর সিফিল রাইটস ইন ইজরায়েল (এসিআরআই) জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে ইজরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে এবং এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানাবে।
দ্য ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ) ইজরায়েল সরকারের কাছে করা এক আবেদনে জানিয়েছে, অবিলম্বে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। কারণ ইজরায়েলে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করার ফলে যারা মুক্ত সংবাদমাধ্যমের পক্ষে সওয়াল করেন তাদের পক্ষে উদ্বেগের।
রবিবার আল জাজিরার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক মানবাধিকার এবং তথ্য জানার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী এই অপরাধমূলক কাজের তীব্র নিন্দা করে। আল জাজিরা তার বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের কাছে সংবাদ এবং তথ্য সরবরাহ করা চালিয়ে যাবে।”
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ইসরায়েলের মুক্ত সংবাদমাধ্যমের ওপর বর্তমান দমন পীড়ন, গাজা উপত্যকায় তার কর্মকাণ্ড গোপন করার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হয়, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন করে। ইজরায়েলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সরাসরি লক্ষ্যবস্তু ও হত্যা, গ্রেপ্তার, ভয়ভীতি এবং হুমকি আল জাজিরাকে সংবাদ পরিবেশনের প্রতিশ্রুতি থেকে আটকাতে পারবে না।” বিবৃতিতে বলা হয়, গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ১৪০ জনেরও বেশি প্যালেস্তিনিয় সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন