চীন সফরে এসে 'এক চীন' নীতিকেই সমর্থন জানালেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তাইওয়ানের স্বাধীনতাকেও তাঁরা সমর্থন করে না বলেই জানান ব্লিঙ্কেন। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশ চীন ও আমেরিকা। এতদিন তাইওয়ান নিয়ে চীনের সমস্ত দাবিই খারিজ করে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার আমেরিকার সেই অবস্থান কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলো। রবিবার চীনা বিদেশ সচিব ওয়াং ই-র সাথে বৈঠকের পর সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-র সাথে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয় দু'জনের মধ্যে। দুই দেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অর্থনীতি নিয়েও কথা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।
বৈঠক শেষে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, গোটা পৃথিবী এই দুই দেশের দিকে তাকিয়ে। আমাদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। চীন ও আমেরিকার মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক আমি চাই না। ওয়াশিংটন 'এক চীন' নীতিকে সমর্থন করে। তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না। কিন্তু এটাও মনে রাখা উচিত তাইওয়ানের ওপর চীনের আগ্রাসনকেও সমর্থন করে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, আমেরিকা চীনের বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে না বা ঘটাতে চাইছেও না। চীনের ওপর আধিপত্য বিস্তারও করতে চায় না। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তার কারণে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
চীনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৈঠকে জিনপিং বলেন, চীনের সাথে আমেরিকার দ্বন্দ্বের কোনো কারণ নেই। তবে আমরা যেমন আমেরিকাকে সম্মান করবো আমেরিকারও উচিত আমাদের সম্মান করা। তাতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর চীন ও তাইওয়ানের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছিল। সেই সময় তাইওয়ানের আকাশজুড়ে চীনা যুদ্ধবিমান হানা দেওয়ারও ঘটনা ঘটেছিল। পাল্টা 'মিত্র' আমেরিকার দেওয়া অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ নিয়ে মহড়া চালিয়েছিল তাইওয়ানও।
প্রসঙ্গত, চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দক্ষিণ চীন সমুদ্রের দ্বীপ 'তাইওয়ান' নিজেদের স্বায়ত্বশাসিত রাষ্ট্র বলে দাবি করে। অন্যদিকে, তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এসেছে চীন। তবে ঐতিহাসিকভাবে তাইওয়ান চীনের অংশ বলেই জানা যায়। ১৯৪৯ সালের গৃহযুদ্ধে মাও সে তুং-র নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বাহিনীর কাছে চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বাধীন কুওমিনতাং গোষ্ঠী পরাজিত হয়ে তাইওয়ানে চলে যায়। তারপর থেকেই চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে উঠেছে তাইওয়ান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন