একদিকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে দলেই উঠছে প্রশ্ন, অন্যদিকে বিরোধী রিপাবলিকানরা কিউবার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের জন্য চাপ তৈরি করছে। ফলে বেকায়দায় মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। কিউবায় অবরোধ তোলার দাবি জোরালো হচ্ছে দেশের অন্দরেই। আমেরিকার কমিউনিস্ট পার্টি কিউবা থেকে হাত তোলো দাবি তুলে পথে নেমেছে। শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীদের একটা অংশ অবরোধ তোলার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বাইডেনকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
গত বছর মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ে বাইডেন ট্রাম্পের কিউবা নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের দমনীয় কিউবা নীতি মানুষের ক্ষতি করেছে বলেও নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, এর পরিবর্তে ওবামার সময়ের মতো সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। কিউবায় পর্যটকদের যাওয়ার অনুমোদন এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনের চেষ্টা করা হবে। কিন্তু একবছর পরও বাইডেন কোনও পদক্ষেপ করেননি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের কিউবা নীতির পর্যালোচনা এখনও চলছে। সেই কাজ শেষ হয়নি। বাইডেন প্রশাসনের কিউবা নীতির বিরোধিতা করে আমেরিকার কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিইউএসএ) কিউবার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করেছে। অবরোধ তুলে নিয়ে কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপনের দাবিও জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার কিউবা সংহতিতে সমাবেশের ডাকও দিয়েছেন তাঁরা। কিউবার জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে কিউবা থেকে অবরোধ তোলার দাবি জানিয়ে সিটি কাউন্সিল, ট্রেড ইউনিয়নে, স্কুল বোর্ডে, চার্চে এবং অন্যত্র প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। সিরিঞ্জ ফর কিউবা ক্যাম্পেনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বাইডেনের এই নীতি নিয়ে ডেমোক্র্যাট দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। ডেমোক্র্যাটরা মনে করেন ট্রাম্পের আগ্রাসী বিদেশনীতির বিরুদ্ধেও মার্কিন জনগণ ভোট দিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটদের। ফলে সেই জনরায়কে এত দ্রুত উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যাঁরা কিউবা নীতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন তাঁরা জানিয়েছেন, কিউবা নীতির পর্যালোচনায় হাভানার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কথাও যেমন উঠে এসেছে, তেমনই ওবামার মত কিউবা থেকে কিছু আদায় না করে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে গেলে তার সম্ভাব্য বিরূপ রাজনৈতিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এদিকে হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, বাইডেন প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রেখে মধ্যপন্থা খোঁজার চেষ্টা করছে। আমেরিকায় থাকা কিউবার নাগরিকরা যাতে দেশে আত্মীয়দের কাছে অর্থ পাঠাতে পারেন, যার উপরে ট্রাম্প প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তা তুলে নেওয়া হতে পারে। পাশপাশি পর্যটকরা চাইলে কিউবা যেতে পারেন, এইধরনের খুচরো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক অবরোধ সহ অন্যান্য দমনীয় নীতি বজায় রেখেই দেবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন