মায়ানমারের (Myanmar) জনগণের উপর বিমান হামলা (Air Strike) চালিয়েছে সেনা বাহিনী। এই হামলায় কমপক্ষে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু ও মহিলা। এই বিমান হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে নিয়েছে মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকার।
এদিকে, উত্তর-পশ্চিম সাগাইং অঞ্চলের পা জি গি গ্রাম (Pa zi gyi Village)-কে লক্ষ্য করে সেনাবাহিনীর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি (BBC)-কে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার, সকালে সাগাইং এলাকার পা জি গি গ্রামে (Pa zi gyi Village) জড়ো হয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। উপলক্ষ্য ছিল বিরোধী আন্দোলনের স্থানীয় দফতরের উদ্বোধন করা। সেখানেই সকাল ৮টা নাগাদ আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ শুরু হয়।
তারা কমপক্ষে ৮০টি মৃতদেহ সংগ্রহ করেছেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
আর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শ’দেড়েক মানুষের জমায়েত হয়েছিল সেই কর্মসুচিকে কেন্দ্র করে। তার মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলারাও ছিলেন। সামরিক জুন্টা সরকারের যুদ্ধ বিমান থেকে ফেলা বোমার আঘাতে তাঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, বেঁচে নেই বিরোধী আন্দোলনের স্থানীয় নেতৃত্বও।
সামরিক জুন্টা সরকারের মুখপাত্র জেনারেল জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, 'হ্যাঁ, আমরা বিমান হামলা চালিয়েছি।'
তিনি জানিয়েছেন, আক্রমণের জন্য তারা Pa Zi Gyi গ্রামকে বেছে নিয়েছিল, কারণ ওই গ্রামে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের একটি কার্যালয়ের উদ্বোধনের অনুষ্ঠান চলছিল। পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস বা পিডিএফএস নামে পরিচিত এই অভ্যুত্থানবিরোধী মিলিশিয়ারা মায়ানমারের বিভিন্ন অংশে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান চালাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, প্রথম বোমাবর্ষণ পর্ব শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টা বাদে একটি হেলিকপ্টার আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। সেখান থেকেও গুলি ছুটে আসছিল। তাতেও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সেনাবাহিনীর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে রাষ্ট্র সংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক (Volker Turk) বলেছেন, 'বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সেনাবাহিনীর আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। তা সত্ত্বেও শত্রুতার আচরণে তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের বিধিগুলিকে লঙ্ঘন করে।'
তিনি আরও বলেন, 'এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সামরিক বাহিনী এবং এর সহযোগী মিলিশিয়ারা ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী। এমন কিছু ঘটনা আছে, যেগুলি নিয়ে মানবতা এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে মামলা গঠিত হতে পারে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন