গোটা আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নেওয়ার পর তালিবানদের একের পর এক অরাজকতার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বিশ্ব চাইছে তালিবানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের করার। কিন্তু এরই মাঝে রীতিমতো হুঙ্কার ছাড়লেন পঞ্জশিরের 'শের' আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমদ মাসুদ।
জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই বাগলান প্রদেশে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে তালিবানিরা। সূত্রের দাবি অনুসারে ওই অঞ্চলে নর্দান অ্যালায়েন্সের হামলায় কমপক্ষে ৩০০ তালিবানি যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ জানিয়েছেন পঞ্জশিরে তালিবান বিরোধীদের হাতে পাল্টা মার খেয়ে পিছু হটেছে তালিবানিরা। পঞ্জশির যে আত্মসমর্পণ করবে না, তা আগেই স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। যদিও অবশ্য সাফাই গেয়ে বলেছেন, যুদ্ধের মাধ্যমে রক্তপাত চান না।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং দুবাইয়ের আপবিয়া টিভিকে এক সাক্ষাৎকারে মাসুদ স্পষ্ট জানান যে, তালিবানের কাছে মাথা নত না করে তিনি তাঁর বাবার দেখানো পথেই হাঁটবেন। গতকাল থেকেই তালিবান-মাসুদ আলোচনা নিয়ে জোর তরজা চলছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, হক্কানি নেটওয়ার্ক জানিয়েছে যে, মাসুদ তালিবানি আনুগত্য মেনে নিয়েছেন। কিন্তু রবিবার মাসুদ বলেন, 'আমাদের দাবি মেনে না নিলে যুদ্ধ অনিবার্য।' তিনি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে আরও বলেন, 'বিদ্রোহী যোদ্ধারা শুধুমাত্র পঞ্জশিরের জন্যে নয়, গোটা আফগানিস্তানের জন্য লড়ছেন।'
বর্তমানে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে যোদ্ধারা পঞ্জশিরে এসেছেন। তাজিক, উজবেক, হাজারা থেকে পস্তুন, সবাই তালিবান বিরোধিতায় নেমেছে বলে জানান তিনি। এদিকে দুবাই ভিত্তিক টিভি চ্যানেলকে মাসুদ বলেছেন, 'এমন কোনও সরকারে আমার আপত্তি নেই যেখানে তালিবানও অংশ নিচ্ছে। তবে তালিবান যদি সর্বগ্রাসী শাসন ব্যবস্থা স্থাপনের চেষ্টা করে, আন্তর্জাতিক মহলে তা স্বীকৃতি দেওয়া উচিত হবে না। কাবুলের সরকারে আফগানিস্তানে বসবাসকারী সকল জনজাতির অংশগ্রহণ প্রয়োজন।'
অন্যদিকে এদিনও কাবুল বিমানবন্দর থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেখানে এক বন্দুকবাজের গুলিতে এক আফগান সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও আমেরিকা ও জার্মান সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। বাহিনীর পাল্টা গুলিতে বন্দুকবাজের মৃত্যু হয়েছে। যদিও তিনি তালিবানি দলের সদস্য কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন