শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সোমবারই দেশ ছেড়েছেন। কিন্তু তারপরেও সে দেশের হিংসাতে লাগাম পড়েনি। সোমবার দেশ জুড়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ, পিটিয়ে মারার খবর মিলেছে। মঙ্গলবারও তা অব্যাহত থেকেছে। বিশেষ করে হামলার শিকার হয়েছেন হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী-পদাধিকারীরা। কাউকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। কারও বাড়ির দরজা বন্ধ করে অগ্নিসংযোগ করেছেন হামলাকারীরা। আর যার ফলে একদিনেই দেশে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০৯ জনের। মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে আরও প্রায় ৩৫ জনের।
রবিবার থেকে হাসিনার পদত্যাগের দাবি তুলে রাস্তায় নামে আন্দোলনকারীরা। বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলো সূত্রে খবর, রবিবারই মৃত্যু হয় অন্তত ১১৪ জনের। ১৬ জুলাই থেকে গত ২১ দিনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪৪০ জনের। যার মধ্যে গত দু'দিনেই মৃত্যুর খবর মিলেছে প্রায় আড়াইশো মানুষের।
সোমবার দিনভর বিক্ষুব্ধ ছিল গোটা দেশ। বিশেষ করে বিকালের পর থেকে হামলা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। প্রথম আলো সূত্রে খবর, সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তত ৯ জন মন্ত্রী এবং অন্তত ২৭ জন সাংসদের বাড়িতে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার সকাল ১১টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে ৩৭টি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এছাড়া, ৫০০ জন আহতকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। সূত্রের খবর, সোমবার পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ফলে ঢাকার উপকণ্ঠে সাভার ও ধামরাই এলাকায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার বিকেলে খুলনায় আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি জি এম মোহসিন রেজাকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে মারে বিক্ষুব্ধ জনতা। তাঁকে পিটিয়ে মেরে তাঁর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে পুড়েও যায় তাঁর দেহ। এছাড়া, যশোরের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের হোটেলেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই হোটেলে আগুনে পুড়ে বিদেশি-সহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার ঢাকার উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া, হবিগঞ্জে ছয়জন, যশোরে আটজন, খুলনায় তিনজন, বরিশালে তিনজন, লক্ষ্মীপুরে ১১ জন, কুষ্টিয়ায় ছয়জন, সাতক্ষীরায় তিনজন ও গাজীপুরের শ্রীপুরে ছয়জন নিহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার খুলে দেওয়া হয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে জাতীয় রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিতি কম দেখা গেছে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন