শেখ হাসিনার ইস্তফা এবং দেশত্যাগের পরেও বাংলাদেশের অবস্থা ঠিক কোনদিকে যাচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যেই আওয়ামী লিগ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, সেনাপ্রধান দেখা করেছেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। সূত্র অনুসারে, আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ক্ষমতার দখল নিতে চলেছে সেনাবাহিনি। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনি।
সূত্র অনুসারে এদিন সেনাবাহিনির পক্ষ থেকে ইস্তফা দেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হয়। এরপরেই ইস্তফা দেবার এবং দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও দেশত্যাগ করে তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দেশত্যাগ করে তিনি আগরতলা গিয়ে সেখান থেকে বিমানে উঠেছেন বলে জানা গেছে। একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে তিনি দিল্লি যাবেন। যদিও অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে তিনি দিল্লি থেকে সরাসরি লন্ডন উড়ে যেতে পারেন।
শেখ হাসিনার ইস্তফার দাবিতে দেশ জুড়ে গত কয়েকদিন ধরে চলা বিক্ষোভ এবং হিংসার মধ্যে রবিবার গভীর রাতে জেনারেল জামান সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় নিজের বাসভবনে বৈঠক করেছিলেন। তখনই অনুমান করা হয়েছিল যে এবার বাংলাদেশের সমস্যায় হস্তক্ষেপ করতে চলেছে সেনাবাহিনি।
সোমবার শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে সেনাপ্রধান জানান, তিনি সবকিছুর দায়িত্ব নিচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি-র পক্ষ থেকে বাংলাদেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগেই তিনি সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জানা গেছে, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই দলে দলে মানুষ ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। অবাধে চলে লুটপাঠ। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এইসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার। যেখানে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ গণভবন থেকে দামি জিনিসপত্র নিয়ে বেরোচ্ছেন।
জানা যাচ্ছে এদিন দুপুরে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাড়িতে উত্তেজিত জনতা হামলা চালায়। বাড়ির গেট ভেঙে সেখানে ঢুকে পড়ে দলে দলে মানুষ। এছাড়াও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের সদর দপ্তরে। ঢাকায় ভাঙা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মূর্তি।
এদিন সেনা প্রধান বলেন, আপনারা সেনাবাহিনির প্রতি আস্থা রাখুন। আমি সমস্ত দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন। আন্দোলনরত ছাত্ররা দয়া করে ঘরে ফিরে যান। এখন ছাত্রদের কাজ হচ্ছে শান্ত হওয়া এবং আমাদের সাহায্য করা। আমি আদেশ দিয়েছি সেনা পুলিশ আর কোনও গোলাগুলি চালাবে না। আপাতত সবার দায়িত্ব সেনাবাহিনিকে সাহায্য করা।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান আরও বলেন, তিনি জামাত, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আজকের বৈঠকে ছিলেন। তাঁরা একযোগে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া ওই বৈঠকে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান আসিফ নজরুল। তিনি আমার সামনেই ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একটি সুন্দর বার্তা দিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন