দক্ষিণ এশিয়ার নতুন তারকার জন্ম হল স্বাধীনতা লাভের মাত্র ৫০ বছরের মধ্যে। একই সঙ্গে পিছনে ফেলে দিল পড়শী দুই দেশকে। এই নতুন তারকা হল শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। মোট মাথাপিছু আয়ে ভারত ও পাকিস্তান, দু'দেশকেই পিছনে ফেলে দিল বাংলাদেশ। মাথাপিছু আয় কী? দেশের মোট আয়কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যে গড় হয়, তার হিসাবে ভারত ও পাকিস্তানের থেকে অনেকখানি এগিয়ে বাংলাদেশ। এই মাথাপিছু আয়কে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি সূচক হিসাবে ধরা হয়।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের সময় দেশের পরিস্থিতি মোটেই অনুকূল ছিল না। একদিকে মন্বন্তর, অন্যদিকে যুদ্ধ - কয়েক কোটি মানুষ সব ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতে। বহু মানুষ প্রাণ খুইয়েছিলেন পাকিস্তানি সেনার হাতে। সে-দেশের ক্যাবিনেট সচিব গত মাসে জানিয়েছেন, গত এক বছরে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ২,২২৭ মার্কিন ডলার। সে জায়গায় পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১,৫৪৩ মার্কিন ডলার। আর গত অর্থবর্ষে ভারতের মাথাপিছু আয় ছিল ১,৯৪৭ মার্কিন ডলার। আবার পঞ্চাশ বছর আগে বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তান ৭০ শতাংশ বেশি ধনী ছিল। সে জায়গায় এখন বাংলাদেশ পাকিস্তানের থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি বিত্তবান!
সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন রফতানি, সামাজিক অগ্রগতি এবং আর্থিক সংযমের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ঢাকার রফতানি ২০১১ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে প্রতি বছর ৮.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে বিশ্বে রফতানি বৃদ্ধির গড় হার ছিল ০.৪ শতাংশ। সাফল্যের অন্যতম বড় কারণ পোশাক শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া। পাশাপাশি বাংলাদেশে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানে মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা কমছে বলে খবর।
অন্যদিকে, ঢাকার ঋণ ও আয়ের অনুপাত দিল্লি ও ইসলামাবাদের চেয়ে অনেকখানি কম। এই অনুপাতকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। সে জায়গায় ভারত ও পাকিস্তানে এই অনুপাত প্রায় ৯০ শতাংশ। তবে বাংলাদেশের এই সাফল্য বজায় রাখতে বেশ কিছু সমস্যা পোহাতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উন্নত দেশগুলিতে তারা এখন মাসুল ছাড়াই রফতানির সুবিধা পায়। উন্নয়নের কারণে ২০২৬ থেকে সেটা আর পাবে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন