কেবলমাত্র আদানিই লাভবান হচ্ছে - বাংলাদেশেও আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে প্রশ্ন উঠছে

২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বাংলাদেশ সফরের পর আদানিদের সঙ্গে বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে চুক্তি করে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র আদানি গ্রুপের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেই তা করা হয়েছে।
বাংলাদেশেও আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে প্রশ্ন উঠছে
বাংলাদেশেও আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে প্রশ্ন উঠছেগ্রাফিক্স - আকাশ নেয়ে
Published on

শুধু ভারতে নয়, আদানিকে ঘিরে ক্ষোভ জন্মেছে বাংলাদেশেও। আদানিদের বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বাংলাদেশে। অভিযোগ উঠছে, আদানিদের কাছ থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে প্রতিবেশী বাংলাদেশকে।

২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বাংলাদেশ সফরের পর আদানিদের সঙ্গে বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে চুক্তি করে বাংলাদেশ। তারপর, ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় ১৬ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু করে হাসিনার দেশ। চলতি বছরে মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলে, তা থেকে অতিরিক্ত মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

এনিয়ে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রাক্তন প্রধান বিডি রহমতুল্লাহ বলেন 'এই প্রকল্পে চারটি পক্ষ। ভারত এবং বাংলাদেশের জনগণ, আদানি গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশ সরকার। লাভবান হচ্ছে কেবলমাত্র একটিই পক্ষ - আদানি।'

বাংলাদেশের অভিযোগ, বিদ্যুতের ইউনিট পিছু চড়া দাম নিচ্ছে আদানি। ভারত সরকার গোড্ডার প্রকল্পকে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ (SEZ) ঘোষণা করায় করভার হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু সেই সুবিধা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে হাসিনা সরকার।

বাংলাদেশের মিডিয়াতেও এনিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনলাইন সংবাদ মাধ্যম - দ্য ডেইলি স্টার জানাচ্ছে, আদানির সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে দেশ-বিদেশের ৩ জন আইন ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চুক্তিটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং শুধুমাত্র আদানি গ্রুপের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেই তা করা হয়েছে।

সিডনিভিত্তিক ক্লাইমেট এনার্জি ফাইন্যান্স, অস্ট্রেলেশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ টিম বাকলি বলেন, 'এক কথায় এই চুক্তিটিতে কেবল আদানিই জিতেছে। এই চুক্তিটি এতটাই বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী যে আমি ভাবছি, কোনো সচেতন মানুষ কেন বাংলাদেশের পক্ষে এই চুক্তিটি সই করবেন।'

তিনি জানান, 'আদানি যে কয়লা ব্যবহার করবে, সেই গুণমানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন একটি সূচকে যদি দাম নির্ধারণ করা হয়, তাহলে তা কীভাবে ন্যায্য হতে পারে? বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এটিই সম্ভবত এমন একটি চুক্তি, যেখানে আদানির জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত উদার।'

জানা যাচ্ছে, আদানির বিদ্যুৎ কেনার চুক্তিতে 'ন্যূনতম অফটেক গ্যারান্টি' রয়েছে, যার ফলে উৎপাদিত বিদ্যুতের অন্তত ৩৪ শতাংশ কিনতেই হবে বাংলাদেশকে। ফলে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চাহিদা যদি কমও থাকে বা বিদ্যুৎ না নেয়, তারপরও ওই ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কয়লার খরচ দিতে হবে। একইসঙ্গে গুণতে হবে কয়লা সরবরাহকারী, পরিবহনকারী ও বন্দর অপারেটরদের সব জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ।

প্রসঙ্গত, আদানির সঙ্গে বিদেশি চুক্তি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফরের সংযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে লোকসভায়। সাংসদ পদ খারিজের আগে গত ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মোদী-আদানির একাধিক বিদেশ সফরের মধ্যে ছিল বাংলাদেশের কথাও। যদিও সংসদীয় নথি থেকে সেই বক্তব্য মুছে দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। কিন্তু, তারপরেও বিতর্ক থামছে না।

বাংলাদেশেও আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে প্রশ্ন উঠছে
পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ! নজিরবিহীন ভাবে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি ডোনাল্ড ট্রাম্প

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in