ঘোরতর রাজনৈতিক সংকটের মুখে বাংলাদেশ। অসমর্থিত সূত্রের খবর অনুসারে ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি দেশ ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দখল নিয়েছে জনতা। জানা যাচ্ছে সে দেশের শাসন ক্ষমতার দখল নিতে চলেছে সেনাবাহিনি।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো-র সূত্র অনুসারে - আজ সোমবার বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে এক সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে। এই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। ওই সূত্র থেকে দাবি করা হয় তাঁরা হেলিকপ্টারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
প্রথম আলো-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এই বৈঠকে ডাক পেয়েছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলও ওই বৈঠকে উপস্থিত আছেন। এই বৈঠক শেষে সেনাপ্রধান জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।
রবিবার দিনভর দেশের একাধিক মন্ত্রী, শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে এখনও পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। বাংলাদেশে আন্দোলন শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩০০-র বেশি সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে রবিবার নতুন করে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। এদিন হাজার হাজার আন্দোলনকারীরা রাজধানী ঢাকার রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান। বাংলাদেশী সংবাদ পত্র প্রথম আলো সূত্রে খবর, এদিন ছাত্ররা ঢাকার একাধিক মন্ত্রী, আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশদের। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে রবিবার ৯৮ জনের মৃত্যু হয় বলে প্রথম আলো সূত্রে খবর।
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রবিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করে সরকার। পাশাপাশি, সোমবার থেকে তিন দিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়। এছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। তবে কেবলমাত্র মোবাইলের ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। চলছে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। ফেসবুক, এক্সের মতো সমাজমাধ্যম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, যাঁরা হিংসা চালাচ্ছেন, তাঁরা কেউই ছাত্র নন, তাঁরা সন্ত্রাসবাদী।
রবিবার সন্ধ্যাতেই অশান্তি ঠেকাতে বাংলাদেশ জুড়ে জারি করা হয় কার্ফু। অশান্তি আটকাতে সোমবার থেকে তিন দিন ছুটি ঘোষণা করে সরকার। যদিও সোমবার সকাল থেকেই কার্ফু উপেক্ষা করে ঢাকার রাস্তায় জমায়েত হতে থাকে সাধারণ মানুষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন