গত বছরের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অরণ্যনিধন কমেছে আমাজনে, শুক্রবার এমনটাই দাবি করল ব্রাজিল সরকার। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ স্পেস রিসার্চ (ইনপে)-এর প্রকাশিত স্যাটেলাইট তথ্যের ভিত্তিতেই এই দাবি করেছে ব্রাজিল সরকার।
শুক্রবার ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের নয়া প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আমাজন বৃষ্টিঅরণ্যের নিধন গত বছরের প্রথম ৬ মাসের তুলনায় প্রায় ৩৩.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইনপে-এর মতে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর শাসনকালে গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রথম ৬ মাসে যেখানে আমাজন অরণ্যের ৩৯৮৮ বর্গকিলোমিটার কেটে সাফ করে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আমাজনের ২৬৪৯ বর্গকিলোমিটার বন উজাড় করা হয়েছে। পাশাপাশি, শুধুমাত্র ২০২৩ সালের জুন মাসেই গত বছরের জুনের তুলনায় রেকর্ড ৪১ শতাংশ জঙ্গল সাফ কমেছে বলে জানা গিয়েছে ইনপে-এর তথ্যে।
চলতি বছররে জানুয়ারি মাসেই দেশের দায়িত্বে এসে প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাজন জঙ্গল নিধন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ব্রাজিলের আদিবাসী নেতারা তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
যদিও ব্রাজিলের ৬০ শতাংশ জায়গা জুড়ে থাকা বিশ্বের এই সর্ববৃহৎ বৃষ্টিঅরণ্য উজাড় পুরোপুরি বন্ধ করা প্রেসিডেন্ট লুলার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে শুক্রবার অরণ্য নিধন নিয়ে বিবিসি-কে ব্রাজিলের পরিবেশমন্ত্রী মেরিনা সিলভা জানিয়েছেন, “আমরা ধীরে ধীরে আমাজনের নিধনে একটি স্থায়ী নিম্নগামী প্রবণতা তৈরি করতে পেরেছি।”
তবে অরণ্যনিধনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ইঙ্গিত মিললেও রিপোর্ট অনুযায়ী সাম্প্রতিককালে আমাজন রেকর্ড পরিমাণ দাবানলের সাক্ষী থেকেছে। জুন মাসে স্যাটেলাইট মনিটারিংয়ের মাধ্যমে আমাজনে মোট ৩ হাজার ৭৫টি দাবানল দেখা গিয়েছে। যা ২০০৭ সালের পর থেকে এক মাসে সর্বোচ্চ। এর ফলে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত আমাজন জঙ্গল থেকে যে পরিমাণ কার্বন পৃথিবীর আকাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে, তা বিশ্বের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন