ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস-এর সঙ্গে যুক্ত নার্সরা ধর্মঘটে নামলেন। বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে এই ধর্মঘটে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাসের দাবিতে স্বাস্থ্যকর্মীরা এই ধর্মঘটে নেমেছেন। জানা গেছে ৭৬টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রায় ১ লক্ষ নার্স এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন। ডিসেম্বর ১৫-র পর আবার এই ধর্মঘট হবে ২০ ডিসেম্বর। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, অধিকাংশ ব্রিটেনবাসী নার্সদের এই ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক শ্রমিক ধর্মঘট আছড়ে পড়ছে ব্রিটেনে। এর আগে ধর্মঘটে নেমেছিলেন রেল শ্রমিক, ডাক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা এবং বিমানবন্দরের কর্মীরা। ব্রিটিশ নার্সিং ইউনিয়নের ১০৬ বছরের এটাই প্রথম সবথেকে বড়ো ধর্মঘট। যদিও কেমোথেরাপি, ডায়ালিসিস এবং ইনটেনসিভ কেয়ারকে এই ধর্মঘটের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
সূত্র অনুসারে ব্রিটেনে এই মুহূর্তে মুদ্রাস্ফীতির হার ১০ শতাংশ। যদিও বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৪ শতাংশের প্যাকেজ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার ইউনিয়ন এবং মালিকদের মধ্যে শ্রমবিরোধ বেড়েছে।
রয়্যাল কলেজ অফ নার্সিং ইউনিয়নের প্রধান প্যাট কালেন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, আজ খুবই দুঃখজনক দিন। আজকের দুঃখজনক দিন নার্সিং-এর জন্য, রোগীদের জন্য, যে সব রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে তাঁদের জন্য এবং এই সমাজের সাধারণ মানুষের জন্য এবং অবশ্যই জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বারকলে জানিয়েছেন, যেভাবে ধর্মঘট এগিয়ে চলেছে তা খুবই দুঃখজনক। এর পাশাপাশি তিনি রোগীদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, নার্সদের দাবি মুদ্রাস্ফীতি ছাড়াও তাঁদের বেতন কমপক্ষে ৫ শতাংশ বাড়ার কথা। কারণ তাঁরা দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে বঞ্চিত। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কম বেতন মানে কর্মী কম এবং সেক্ষেত্রে রোগীদের পরিষেবায় ঘাটতি। যদিও সরকার ইউনিয়নের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসতে অস্বীকার করেছে।
আন্দোলনরত নার্স লুইস মিচেল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমরা চাইনা রোগীদের কোনোরকম অসুবিধে হোক। কিন্তু এই দেশে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে রোগীদের সঠিক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না, কারণ স্বাস্থ্য পরিষেবায় যথেষ্ট বরাদ্দ নেই। আমরা এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত সহজে নিইনি। আমাদের মনে হয়েছে এবার প্রতিবাদ করার সময় এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন