আপনি চাইছেন ভেসে বেড়াতে? ভরশূন্য থাকতে? মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে এবার পৃথিবীতেই। হ্যাঁ, যতক্ষণ খুশি, ততক্ষণ পৃথিবীতে ভেসে থাকা যাবে।
কিন্তু কীভাবে? কল্পনাকে বাস্তব রূপ দিল চীন। সেদেশের জিয়াংশু প্রদেশের পূর্ব দিকে, শুঝাউ শহরে মহাকাশ গবেষণা সংস্থার উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এমনই এক 'চাঁদ'। পার্থিব মাধ্যাকর্ষণের টান কাটিয়ে ভেসে থাকা যাবে যতক্ষণ খুশি। চাঁদে খুব সামান্য হলেও আছে মাধ্যাকর্ষণের টান। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের ছয় ভাগের মাত্র এক ভাগ। যাকে ভরশূন্য অবস্থাই বলা হয়ে থাকে।
চীনা দৈনিক ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানিয়েছে, এই অসাধ্যসাধন সম্ভব হয়েছে প্রকল্পের কর্ণধার, ‘চায়না ইউনিভার্সিটি অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজি’-র অধ্যাপক লি রুইলিনের জন্য। মূলত এই কৃত্রিম চাঁদ তৈরির ভাবনা তাঁর মাথা থেকেই বেরিয়েছে।
কেন তিনি এরকম বানালেন? লক্ষ্য, চাঁদে মানুষ নামানোর প্রস্তুতি নেওয়া। প্রশিক্ষণ নেওয়া। চাঁদের ‘মন’ বোঝা। ভরশূন্য অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ থাকতে গেলে কীরকম অনুভূতি হয়, কী সুবিধা-অসুবিধা হতে পারে পৃথিবীতে, বায়ুমণ্ডল নেই বলে সূর্য থেকে প্রতি মুহূর্তে ছুটে আসা মহাজাগতিক রশ্মির ঝাপটা থেকে কীভাবে নিজেদের বাঁচাবেন চাঁদের মাটিতে নামা নভশ্চররা, তা পৃথিবীতেই আগাম বুঝে নিতে এই কৃত্রিম চাঁদ বানানো হয়েছে।
এই কৃত্রিম চাঁদের ব্যাস অবশ্য আসল চাঁদের মতো নয়। অনেকটাই কম। তবে এই কৃত্রিম চাঁদের পিঠ ভরিয়ে দেওয়া থাকবে আসল চাঁদের পাথর আর ধুলোবালি দিয়ে। বেজিং ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, আগামী দশকে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠাবে তারা। পাশাপাশি পৃথিবীর কক্ষপথে একটি মহাকাশ স্টেশন ইতিমধ্যেই বানিয়ে ফেলেছে বেজিং।
প্রসঙ্গত, এই বছরে ‘কৃত্রিম সূর্য’ও বানিয়েছে চীন। এক লক্ষ কোটি ডলারের প্রকল্পে চিনের তৈরি নিউক্লিয়ার ফিউশন রিয়্যাক্টরে সূর্যের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি তাপমাত্রার জন্ম দেওয়া সম্ভব হয়েছে ১৭ মিনিটের জন্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন