দক্ষিণ আফ্রিকায় সদ্য সমাপ্ত ব্রিকস সম্মেলনে ভারত-চিন সীমান্তের সমস্যা মেটানো নিয়ে মোদী-জিংপিন কূটনৈতিক বৈঠকের পরেও দুই দেশের সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফেরানোর কোনও চেষ্টা করল না চিন। উল্টে দেশের নয়া মানচিত্রে ভারতের একটা বড় অংশকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করল শি জিংপিন সরকার।
২৮ আগস্ট সোমবার প্রকাশিত ২০২৩ সালের নয়া সাধারণ মানচিত্রে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখের আকসাই চিনকে সরাসরি নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছে চিন সরকার। অরুণাচল প্রদেশের উপর প্রথম থেকেই নজর রয়েছে চিন সরকারের। ভারতের এই রাজ্যকে চিন বরাবরই ‘দক্ষিণ তিব্বত’ বলে দাবি করে এসেছে। কিন্তু ভারত নিজের অঞ্চল কোনওভাবেই পড়শি দেশের হাতে ‘ভেট’ হিসেবে তুলে দিতে রাজি নয়। আর সেই নিয়েই ওই অংশের ভারত-চিন সীমান্তের ডোকলাম-সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চল বেশিরভাগ সময়ই উত্তপ্ত থাকে। একাধিকবার সংঘর্ষ বেঁধেছে দুই দেশের সেনার মধ্যে। এবার সেই গোটা রাজ্যকে নিজেদের অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করল চিন।
অন্যদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের লাদাখ অঞ্চলের একটা বড় অংশ যা আকসাই চিন নামে পরিচিত, সেই গোটা অঞ্চলকেই নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছে চিন। প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধে এই অংশ ‘দখল’ করেছে বলে দাবি করে চিন। অন্যদিকে, ভারত তা মানতে নারাজ। তাই স্বাভাবিকভাবেই আকসাই চিন অঞ্চলে বারবার দুই দেশের সেনা সম্মুখসমরে জড়ায়। ওই অঞ্চলে দুই দেশের মধ্যে প্রায় সবসময়ই একটা ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধ’ চলে যা মাঝে মাঝে সক্রিয় সংঘর্ষের আকার ধারণ করে।
পাশাপাশি, সদ্য প্রকাশিত মানচিত্রে তাইওয়ান ও বহু বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরের একটা বড় অংশকেও নিজেদের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে চিন সরকার। দক্ষিণ চিন সাগরের ‘নাইন-ড্যাশ’ লাইন অঞ্চলের উপর চিন সরকার বরাবরই নিজেদের আধিপত্য দাবি করে। যদিও দক্ষিণ সাগরের একটা বড় অংশের উপরে ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইও নিজেদের আধিপত্য দাবি করে। প্রসঙ্গত, সোমবার দেশের সাধারণ মানচিত্রের ২০২৩ সালের সংস্করণ প্রকাশ করেছে চিনে প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন