ফের অরুণাচল প্রদেশের একাধিক স্থানের নামকরণ করেছে চীন। এই জায়গাগুলিকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে ভারত সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে জিনপিং প্রশাসন। যদিও ভারত সরকার চীনের এই দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করেছে।
অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অরুণাচল প্রদেশের ৩০টি জায়গার চীনা নামকরণ করে চতুর্থ তালিকা প্রকাশ করলো বেজিং। চীনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চীনের নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে নাকি ওই তালিকা প্রকাশ করেছে জিনপিং প্রশাসন। এর মধ্যে ১১টি জায়গা বসতি এলাকা। ১২টি পার্বত্য অঞ্চল, চারটি নদী, একটি হ্রদ, একটি পার্বত্য পথ (মাউন্টেন পাস) ও একখণ্ড জমি রয়েছে।
তবে চীনের তরফ থেকে প্রকাশিত নামগুলিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারত। নয়া দিল্লির তরফ থেকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। চীন একাধিক 'কাল্পনিক' নাম তৈরি করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাইছে।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্যাঙ্গের সুরে বলেন, ‘‘আমি যদি আজ আপনার বাড়ির নাম বদলে দিই, সেটা কি আমার হয়ে যাবে? অরুণাচল প্রদেশ চিরকাল ভারতের ছিল, আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে। নাম বদলে কোনও লাভ হবে না। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় আমাদের সেনাবাহিনী রয়েছে।’’
২০১৭ সালে প্রথম এরকম তালিকা প্রকাশ করে চীন। যেখানে জাংনানের (জাংনান হলো অরুণাচল প্রদেশের চীনা নাম) ছটি স্থানের নামকরণ করা হয়েছিল। ২০২১ সালে ১৫টি জায়গার নাম প্রকাশ করেছিল। এবং ২০২৩ সালে তৃতীয় তালিকা প্রকাশ করেছিল তারা। যেখানে ১১টি স্থানের চীনা নাম দেওয়া ছিল।
প্রসঙ্গত, অরুণাচল প্রদেশের উপর প্রথম থেকেই নজর রয়েছে চিন সরকারের। ভারতের এই রাজ্যকে চিন বরাবরই ‘দক্ষিণ তিব্বত’ বলে দাবি করে এসেছে।
২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট একটি সাধারণ মানচিত্রে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখের আকসাই চীনকে সরাসরি নিজেদের অংশ বলে দাবি করে চীন সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরের লাদাখ অঞ্চলের একটা বড় অংশ যা আকসাই চীন নামে পরিচিত। সেই গোটা অঞ্চলকেই নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছে চীন। প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধে এই অংশ ‘দখল’ করেছে বলে দাবি করে চীন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন