পুলিশি হেফাজতে মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল ইরান। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় বৃহস্পতিবার সকালে ২৩ বছরের যুবক মহসিন শেকারিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ইরান সরকারের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। যার জেরে ফের নতুন করে অশান্তির আগুনে ফুটছে ইরান। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমেছে সেখানকার মানুষজন।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই রাজধানী তেহরান সহ ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভকারীদের সমাবেশ। তেহরানের সাত্তার খান স্ট্রিটে রাস্তা অবরোধ শুরু করেছে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তি, সংঘর্ষ হয়েছে। ইরান আদালতের মতে, ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতা’ করেছেন মহসিন শেকারি। সেই ‘অপরাধে’ই তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঠিকমতো হিজাব না পরার অপরাধে গত ২২ সেপ্টেম্বর কুর্দিস্তান থেকে তেহরানে যাওয়ার পথে মাহসা আমিনিকে আটক করে নীতিপুলিশ। এরপরেই জেল হেফাজতে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। মাহসাকে আটক করার ২ ঘণ্টা পর তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
তবে মাহসার পরিবারের দাবি, পুলিশের অত্যাচারে হেফাজতেই খুন হয়েছে সে। এই ঘটনার পর হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে গর্জে ওঠেন ইরানবাসী। তোলপাড় হয় সারা দেশ। সেই বিক্ষোভেই অংশ নিয়েছিলেন মহসিন। সেপ্টেম্বর মাসে তেহরানের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে মহসিনের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, আধা সামরিক বাহিনীর এক জওয়ানকে ছুরি দিয়ে আঘাত করারও অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, এখনও বেশকিছু বিক্ষোভকারী পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত। মহসিনের মৃত্যুদণ্ডের ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হয়ে ইরানের মানবাধিকার কমিশন।
কমিশনের দাবি, এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল যাতে অবিলম্বে প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। তাদের মতে, মহসিনের মৃত্যুদণ্ডের জেরে সরকার যদি কঠোর পরিণতির মুখোমুখি না হয়, তা হলে ইরানে বিক্ষোভকারীদের গণহত্যা হতে পারে। সুষ্ঠু বিচারপ্রক্রিয়া ছাড়াই মহসিনকে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন