সোমবারের পর মঙ্গলবারও পাকিস্তানে বিস্ফোরণে ভেঙে পড়া মসজিদের ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রচুর মৃত দেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট প্রায় ৯০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ১৫০ জনের বেশি আহত। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
সোমবার পাকিস্তানের পেশোয়ারে পুলিশ লাইন সীমানার মধ্যে থাকা এক মসজিদ হঠাৎ কেঁপে ওঠে আত্মঘাতী বোমা হামলায়। মসজিদের একাংশ ভেঙে প্রচুর মানুষ চাপা পড়েন। পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের সময় মসজিদে ৩০০ থেকে ৪০০ জন উপস্থিত ছিলেন। নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশই পুলিশ।
এক কনস্টেবল বলেন, 'মসজিদের ধ্বংসস্তূপে আমি প্রায় সাত ঘন্টা আটকে ছিলাম। আমার উপর একটি মৃত দেহও ছিল। ভেবেছিলাম আর বাঁচতে পারব না। অবশেষে আমাকে উদ্ধার করা হয়।' আপাতত ২০ জন পুলিশ আধিকারিককে গার্ড অফ অনার দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন, 'যাঁরা পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য কর্তব্য পালন করছে, তাঁদের লক্ষ্য করেই সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালাচ্ছে।'
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'নামাজ শুরুর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিস্ফোরণ হয়। তারপরেই চারিদিক কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। আমি প্রাণ ভয়ে দৌড়াতে থাকি।'
বিশেষজ্ঞদের মতে নিরাপত্তার গাফিলতির কারণেই পাকিস্তানে বার বার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ইসলামাবাদের পার্বত্য অঞ্চলে নিরাপত্তায় গলদ রয়েছে বলেও তাঁরা দাবি করছেন। পাকিস্তানি তালিবানি জঙ্গিদের চিহ্নিত না করেই সেনাবাহিনীকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন পাকিস্তানের মসজিদে হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-এ-তালিবান বা টিটিপি নামের একটি জঙ্গি সংগঠন। তারা জানায়, এই হামলা হল উমর খালিদ খুরাসানির মৃত্যুর বদলা। টিটিপির কমান্ডার ছিলেন খুরাসানি। ২০২২-এর অগস্টে পাকিস্তান সেনার গুলিতে নিহত হন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন