কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার বদলে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং পানামা পেপারস কালো টাকা মজুত নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে সেটা প্রমাণিত হচ্ছে। তথ্য জানার অধিকার আইনে অর্থমন্ত্রকের সেন্টার বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্স (সিবিডিটি) জানিয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত হিসেবে দেখা দিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট তদন্তে ২০ হাজার ৭৮ কোটি টাকা গোপন সম্পত্তি চিহ্নিত করা হয়েছে।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ভারত ও বিদেশে এই কালো টাকা পাচার এখনও চলছে। ধনী প্রভাবশালীরা বিদেশে করমুক্ত দেশে অর্থ মজুত করে। তদন্তে কালো টাকার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিবিডিটি জানাচ্ছে, ২০১৮ সালের জুনে কালো টাকা পাচারের পরিমাণ ছিল এক হাজার ১৮ কোটি টাকা। ২০১৯-এ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৫৬৪ কোটি টাকা।
কারা করমুক্ত দেশে টাকা মজুত করে, তার একটা তালিকা পানামা পেপারস প্রকাশ করে। বিশ্বের ধনীদের সঙ্গে ভারতের ধনী প্রভাবশালী রাজনীতিক, কর্পোরেটদের নাম ফাঁস হয়ে যায়। পানামা পেপারসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসও তাদের নাম প্রকাশ করে। ২০১৬ সালে তাদের তালিকায় নাম ছিল এরকম প্রায় ৫০০ ভারতীয়ের। অর্থের লেনদেন সংক্রান্ত ৩৬ হাজার নথি সংগ্রহ করে পানামা পেপারস।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনী প্রভাবশালীদের কালো টাকা মজুত করা নিয়ে নিয়মিত সমীক্ষা-রিপোর্ট প্রকাশ করছে বিশ্বের ১০০টি মিডিয়া সংস্থা নিয়ে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট সংস্থা। তারা ২০১৬ সালে কালো টাকা মজুত নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করে, তাই তুলে ধরে পানামা পেপারস। তাতে প্রভাবশালী ভারতীয় ধনীদের নাম প্রকাশ হয়েছে।
এদিকে ভারতের সিবিডিটি জানাচ্ছে, বেআইনি অর্থ মজুতের পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে, তা উদ্ধারে তদন্ত চলছে। বেআইনি অর্থ পাচার নিয়ে ৪৬টি মামলার তদন্তের সাজা ঘোষণা হয়েছে। ৮৩টির তদন্ত চলছে। এতে কর আদায় হয়েছে ১৪২ কোটি টাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন