প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জুমার কারাবাস ঘিরে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশের সর্বত্র হিংসার আগুন জ্বলছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭২ জনের। গত সোমবার রাতে সোয়েটো শহরের একটি শপিং সেন্টারে লুটের ঘটনা ঘটে। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের। প্রশাসন সূত্রের খবর, শহরের প্রায় ২০০টি শপিং সেন্টারে, মদ, পোশাকের দোকানে লুটপাট হয়। এটিএম, রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ১২ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১২৩৪ জনকে। লুটপাট চলে গৌটেং প্রদেশও। বিভিন্ন দোকানে ঢুকে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে জিনিস লুট করে। কয়েক জায়গায় রবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয় পুলিশকে। আসে সেনাবাহিনীও।
তবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁরা এরকম করছেন তা নয়। যা করছেন সবটাই ‘পেটের দায়ে’। এমনটাই দাবি লুটপাটে অংশ নেওয়া মানুষদের। হিংসা রুখতে পুলিশকে সাহায্য করতে রাস্তায় নেমেছে ২৫০০ সেনা। যদিও তাতেও পরিস্থিতির খুব একটা বদল ঘটেনি।
সোমবার রাতে দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘এই হিংসার আড়ালে আদতে লুটপাট এবং চুরির উদ্দেশ্য পূরণ করছে আসল অপরাধীরা।’ রামাফোসার এই দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞদের একাংশও। তাঁদের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৭ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে। অতিমারি, চাকরি হারানো এবং অর্থনৈতিক মন্দার জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ থেকে ২০১৮, শাসনকালে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জুমার বিরুদ্ধে। তদন্ত শুরু হয়। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তিনি উপস্থিত হননি। আদালতের অবমাননায় সম্প্রতি ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন