গাজা স্ট্রিপের ৮০ শতাংশ মানুষ সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হন। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এই তথ্য জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রশ (ICRC)। মূলত চরম বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণেই তাঁরা অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছে রেড ক্রশ।
গত সোমবার জিংহুয়াতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে – গাজা স্ট্রিপের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ দিনের বেশিরভাগ সময়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হন। ওই অঞ্চলে দিনে মাত্র ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায় বলে রেড ক্রশের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানিয়েছে জিংহুয়া।
সমীক্ষা অনুসারে, গাজা স্ট্রিপে প্রায় ২০ লক্ষর বেশি মানুষের বসবাস। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকার কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে এখানকার অধিবাসীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তেমনই গরমকালে তাপমাত্রা প্রচন্ড বেড়ে গেলেও সমস্যা বাড়ে।
ওই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, গত মে মাসে ইজরায়েলের সঙ্গে লড়াই চলাকালীন গাজা স্ট্রিপের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার সাংঘাতিক ক্ষতি হয়েছে। বহু জায়গাতেই ইলেকট্রিক পোষ্ট এবং বিদ্যুতের তার ভেঙে এবং ছিঁড়ে গেছে। যা এখনও সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় আরও বিপর্যয় নেমে এসেছে।
আইসিআরসি-র সমীক্ষা অনুসারে গাজা স্ট্রিপের অধিবাসীদের কমপক্ষে ২৫ শতাংশের পাওয়ার জেনারেটারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ নেবার মত আর্থিক ক্ষমতা নেই।
এই প্রসঙ্গে আইসিআরসি-র গাজা সাব ডেলিগেশনের প্রধান মিরিয়াম মুলার জানিয়েছেন, গাজায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভয়ংকর এবং যার ফলে জল সরবরাহ, স্যানিটেশন, ভূগর্ভস্থ নালা পরিষ্কার এবং ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।
গাজা স্ট্রিপে বর্তমানে একটিমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। যদিও প্রবল সংকটের কারণে সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তার উৎপাদন ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না। এছাড়াও গাজায় ইজরায়েল থেকে ১২০ মেগাওয়াট এবং ইজিপ্ট থেকে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। যদিও গাজার প্রয়োজন প্রতিদিন ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
প্রশাসনিক আধিকারিকদের বক্তব্য অনুসারে, গাজার একটিমাত্র প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদন এবং ইজরায়েল ও ইজিপ্ট থেকে আনা বিদ্যুৎ যোগ করেও তা কখনোই ২০০ মেগাওয়াটের বেশি হয়না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন