দেশকে 'অচ্ছে দিন' এনে দেবেন। এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার জন্য প্রথমেই দরকার দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা। সেই লক্ষ্যে ২০১৬ সালে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যে পদক্ষেপ তিনি করেন, তা হল ডিমনিটাইজেশন। এমনটাই দাবি গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি সূচকে দেশের অবস্থানকে বিশেষ উপরে তুলে আনতে পারল না মোদি সরকার। ১৮০টি দেশের মধ্যে সদ্য বিশ্ব দুর্নীতি সূচকের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ভারতের স্থান ৮৫। এই রিপোর্টে কেন্দ্রের মোদী সরকার যে বিশেষ স্বস্তি পেল না, তা বলাই বাহুল্য।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বার্ষিক সূচক তৈরি করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। মঙ্গলবার অর্থনৈতিক স্বচ্ছতার নিরিখে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০২১ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট বলছে, দুর্নীতিমুক্ত দেশগুলির ধারেকাছে নেই ভারত। গত বছর ভারত ছিল ৮৬ তম স্থানে। এবার একধাপ উপরে উঠে এসেছে ৮৫ তে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে।
কীভাবে ওই কমিটি রিপোর্ট তৈরি করে? অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশগুলির কাজের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়। সবথেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ পায় শূন্য। সবথেকে বেশি দুর্নীতিমুক্ত দেশ পায় ১০০ নম্বর। সেই মূল্যায়নে ভারত পেয়েছে এবার ৪০ নম্বর। চিন ৪৫ ও বাংলাদেশ ২৬ পেয়েছে। ১৬ ধাপ পিছিয়ে এই সূচকে পাকিস্তান স্থান হয়েছে ১৪০-এ। প্রাপ্ত নম্বর ২৮। টিআই তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন নেই। অবস্থা বিশেষ ভালো নয় ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিরও। যদিও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ভুটান।
কেন ভারতের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটেছে না? ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে দেশের পরিস্থিতিতে ভারতের গণতান্ত্রিক মর্যাদা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। এমনটাই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ, রাজনৈতিক দলগুলির মদতপুষ্ট গুণ্ডা ও দুষ্কৃতী ও দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মীদের আগ্রাসন বেড়েছে। আর তার জেরে দেশের সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নষ্ট হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহ, হিংসাত্মক বক্তব্য, আদালত অবমাননা ও বিদেশি তহবিল সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এই সব কিছুর প্রেক্ষিতে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন