ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। আবার এই অভিযোগ তুলল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার, ‘২০২২ সালে ভারতে মানবাধিকার’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। আর তাতেই ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনা হিসাবে ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
রিপোর্টে ভারতে ‘উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার সমস্যা’ ও অপব্যবহারের তালিকা করা হয়েছে। যেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ, ভিন্নমতাবলম্বী এবং সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
রিপোর্টে, ভারতে জেলবন্দীদের উপর নির্যাতন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, পুলিশ এবং কারারক্ষীদের অকথ্য অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া, ভারতে সাধারণ মানুষের গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ এবং সাংবাদিকদের ধরপাকড়ের সংখ্যাও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি জানিয়েছেন, গত এক বছর ধরে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পরে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালে ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একাধিকবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জনগণের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিধিনিষেধ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনকে হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি যৌন হেনস্থা, কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা, জোর করে বিয়ের মতো ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
বাণিজ্য যুদ্ধে চীনকে প্রতিহত করতে ভারতের সঙ্গে যখন ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সে সময় মানবাধিকার ইস্যুতে ভারতের মার্কিন সমালোচনা বিরল।
হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে ভারতে যেভাবে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিক অ্যাডভোকেসি গ্রুপ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, মুসলিমদের নিশানা করেই বিভিন্ন নীতি এবং পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। আবার, মোদীর সমালোচকরা বলেছেন যে, ২০১৪ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল (BJP) ক্ষমতায় ফেরার জেরে ভারতে ধর্মীয় মেরুকরণ বেড়েছে।
২০২২ সালে, অবৈধ উচ্ছেদের নামে ভারতের একাধিক জায়গায় দোকান ও বাড়িঘর ভেঙে ফেলা (ধ্বংস করা) হয়েছে, যেগুলি অধিকাংশই ছিল মুসলমানদের মালিকানাধীন। সমালোচকরা বলেছেন, ভারতের ২০০ মিলিয়ন মুসলমানদের ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা হিসাবে এই ধ্বংস অভিযান চালানো হয়েছে। তবে, সরকার, উচ্ছেদকারীদের বাঁচাতে দাবি করেছে, সবই আইন মেনে হয়েছে।
সোমবার, মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'মানবাধিকার কর্মীরা রিপোর্ট করেছেন যে, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা তীব্র সমালোচক, তাঁদেরকেই টার্গেট করছে সরকার এবং তাদের বাড়িঘর ও জীবন ধ্বংসের জন্য বুলডোজার চালানো হয়েছে।'
('Human rights activists reported the government was allegedly targeting vocal critics from the Muslim community and using the bulldozers to destroy their homes and livelihoods.')
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন