ঘূর্ণিঝড় মোচার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে মায়ানমার এবং বাংলাদেশের একাংশ। এর ফলে ঝুঁকির মুখে পড়েছে লক্ষ লক্ষ দুর্বল শিশু ও তাঁদের পরিবার। যার মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বসবাস করছে। মঙ্গলবার, আশঙ্কা প্রকাশ করে একথা জানিয়েছে ইউনিসেফ (UNICEF)।
সতর্কতা জারি করে রাষ্ট্রসংঘের এই সংস্থা জানিয়েছে, ‘ঝড়ের সবচেয়ে খারাপ সময় পেরিয়ে গেলেও, ভূমিধসের ঝুঁকি থাকে। এছাড়া, আগামী দিনে জলবাহিত রোগসহ একাধিক সঙ্কট দেখা দিতে পারে।’ এই খবর প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।
গত রবিবার, মায়ানমারের সিতওয়া উপকূলে প্রবল গতিবেগে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় মোচা। এসময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার। প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে এই ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, রবিবার বিকালে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোচা। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর, স্কুল পরিকাঠামো। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা-সহ একাধিক জরুরী পরিষেবা। বিপাকে পড়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। বাস্তুচ্যুত অনেকে মানুষকেই শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আবার অনেকেই, দুর্গম একালায় আটকে পড়েছেন, তাঁদেরকে উদ্ধারের জন্য এখনও পৌঁছানো যায়নি। সকলেই এখন খাদ্য, পানীয়-জল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সুরক্ষার জন্য মানবিক সহায়তার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
এক প্রেস বিবৃতিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জানিয়েছেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে সবথেকে বেশি ক্ষতগ্রস্থ হয়েছে যে এলাকাগুলি, তার মধ্যে রয়েছে জাতিগত সংঘাতপূর্ণ, দারিদ্র্যতার কারণে ধুঁকতে থাকা বসবাসকারী সম্প্রদায়ের আবাসস্থল।’
বিশেষ করে মায়ানমারে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ইউনিসেফ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়েছেন মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১৬ মিলিয়ন (১ কোটি ৬০ লক্ষ) মানুষ। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫.৬ (৫৬ লক্ষ) মিলিয়ন শিশু।
বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির হল বাংলাদেশের কক্সবাজার। এখানে বসবাস করেন প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা। ইউনেসিফ জানিয়েছে, এই ঘূর্ণি ঝড়ের তাণ্ডবের জেরে বাংলাদেশে বিপাকে পড়েছেন ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা, যাদের মধ্যে অর্ধেকই হল শিশু।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে মায়ানমারে ধবংসলীলা চালায় ঘূর্ণিঝড় নার্গিস। এই ঝড়ের তাণ্ডবে প্রাণ হারান ১,৪০,০০০ মানুষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন