প্রকাশিত হল ২০২৩ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। আর সেই তালিকায় আবারও পতন হল ভারতের অবস্থান। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের (Global Hunger Index 2023) তালিকায় বিশ্বের ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১১১ নম্বরে। গতবছর ৬ ধাপ নেমে ভারত পৌঁছেছিল ১০৭ তম স্থানে। এবার সেই স্থান থেকে আরও ৪ ধাপ নিচে নেমেছে ভারত।
তালিকায় উল্লেখযোগ্যভাবে পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কারও পরে ঠাই হয়েছে ভারতের। যদিও এই ক্ষুধা সূচকের হিসেবকে অস্বীকার করে কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘হিসেবে গুরুতর পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ হিসেব।’
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কত মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, কোন দেশের কত মানুষ গুরুতর অপুষ্টিতে ভুগছেন ইত্যাদি তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রতিবছরই প্রকাশিত হয় এই ক্ষুধা সূচক। এছাড়াও অপুষ্টির হার, শিশু মৃত্যুর হার, মহিলা স্বাস্থ্য-সহ আরও বেশ কয়েকটি তথ্যের উপর নির্ভর করে এই তালিকা তৈরি হয়। ০ থেকে ১০০-এর মাপকাঠিতে প্রতিটি দেশকে পয়েন্ট দেওয়া হয় এবং সেই পয়েন্টের বিচারেই তালিকায় যথাস্থানে ঠাই হয় সংশ্লিষ্ট দেশের। সেই হিসেবে এই বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের তালিকায় ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান হয়েছে ১১১ নম্বরে। পড়শি দেশ পাকিস্তান রয়েছে ১০২ নম্বরে, বাংলাদেশ রয়েছে ৮১ নম্বরে, নেপাল রয়েছে ৬৯ নম্বরে এবং শ্রীলঙ্কার স্থান হয়েছে ৬০ নম্বরে।
এবারের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের পয়েন্ট ২৮.৭। রিপোর্ট অনুসারে ভারতে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। অন্যদিকে, ক্ষুধা সূচকের তালিকায় ভারতে অপুষ্টির হার ১৬.৬ শতাংশ। আবার, ভারতে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ।
অন্যদিকে, ভারতে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার হার ৫৮.১ শতাংশ। সূচক বলছে, বয়স অনুযায়ী উচ্চতা এবং ওজনের মধ্যে ভারসাম্য না থাকা অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর হার ১৮.৭ শতাংশ।
তবে ক্ষুধা সূচকে ভারতের এই ‘অধঃপতন’ কোনোভাবেই মেনে নেয়নি ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের তরফে এই নিয়ে এক বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়েছে, “সূচকটিতে গুরুতর পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে। স্পষ্টতই, কিছু ভুল পরিমাপ হয়েছে।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সূচক গণনার জন্য ব্যবহৃত চারটি নির্দেশকের মধ্যে তিনটিই শিশু স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। এবং সেটি দেশের সমগ্র জনসংখ্যার মাপকাঠি হতে পারে না। পাশাপাশি, চতুর্থ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ‘Proportion of Undernourished (PoU) population’-এর হিসেব করা হয়েছে মাত্র ৩০০০ জনের নমুনার সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন