১৫০ জনকে মুক্তি দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জন প্যালেস্তিনিয় বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইজরায়েল। অন্যদিকে ৬৭ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এদিন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়েছে সোমবার হামাস যাদের মুক্তিপ্রাপ্তদের তালিকা তাদের হাতে পৌঁছেছে।
ইজরায়েলের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এই তালিকা নিয়ে আলোচনা চলছে এবং তালিকা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সোমবারই ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চারদিনের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির শেষ দিন। রবিবার এই যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে দুই পক্ষই আলোচনায় বসলেও এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়নি।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তারা যুদ্ধবিরতির সময় আরও বাড়ানোর পক্ষে। কারণ ইতিমধ্যেই শর্ত মেনে তিন দফায় ইজরায়েলি বন্দীদের গাজা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইজরায়েল থেকেও তিন দফায় প্যালেস্তিনিয়দের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার রাতে কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলি সরকারের কাছে পাঠানো একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, "চার দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তারা যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চায়। কারণ ইতিমধ্যেই মানবিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।"
গাজায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে গত ২৪ নভেম্বর। যুদ্ধবিরতির ফলে এই চার দিনে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ এবং জ্বালানী বহন করা সম্ভব হয়েছে।
চুক্তির অধীনে, হামাস মোট ৫০ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই মহিলা এবং নাবালক। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে ইসরায়েলি বন্দীদের তৃতীয় দলকে রেড ক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে ১৪ জন ইসরায়েলি এবং ৩জন বিদেশী নাগরিক রয়েছে। বিনিময়ে ইসরায়েলের জেল থেকে প্রায় ১৫০ প্যালেস্তিনিয় মহিলা ও শিশুকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেয় ইজরায়েল।
সপ্তাহান্তে, চুক্তির মধ্যস্থতায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনকারী কাতার বলেছে যে তারাও যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ানোর আশা করছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রতি ১০ জন বন্দীকে মুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত একটি করে দিন বাড়ানোর প্রস্তাব।
কাতারে আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একজন সিনিয়র প্যালেস্তিনিয় আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, হামাস মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে যে তারা যুদ্ধবিরতি ২ থেকে ৪ দিন বাড়াতে ইচ্ছুক এবং তা করা হলে আরও ২০ থেকে ৪০ জন ইজরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হবে।
ইউএন রিলিফ ওয়ার্কস এজেন্সি (UNRWA) জানিয়েছে, রাফাহ দিয়ে গাজা উপত্যকায় নিয়মিত ট্রাকে করে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির সময় আরও ট্রাকের গাজায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন