ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে সেখানকার ভারতীয় পড়ুয়াদের। কেন্দ্রের 'অপারেশন গঙ্গা' মিশনের মাধ্যমে তাঁদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সেদেশে আটকে পড়া পড়ুয়াদের ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব কেন্দ্রেরই। তা নিয়ে বুক বাজানোর কিছু নেই। এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করল কংগ্রেস।
‘অপারেশন গঙ্গা’ কর্মসূচি আদৌ কতখানি সফল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ, বিরোধীরা। যুদ্ধ চলাকালীন ইউক্রেনের তীব্র ঠান্ডায় দীর্ঘ পথ হেঁটে সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন পড়ুয়ারা। কোনওভাবে যদি পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি রোমানিয়ায় পৌঁছনো যায়। তারপর সেখান থেকে কোনওমতে দেশে ফিরে এসেছেন।
কিন্তু সীমান্তে তাঁদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনারা ভারতীয়দের অত্যাচার করেছে, মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ইউক্রেনের প্রশ্ন ছিল, কেন ভারত রাশিয়াকে সমর্থন করছে। সেই অভিযোগে তাঁদের প্রতি পদে বাধা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা বিমানে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন, বিমানে মন্ত্রীরা পড়ুয়া-সহ আটকে পড়া ভারতীয়দের বাধ্য করছেন প্রধানমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি দিতে।
সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিলেন কংগ্রেস মুখপাত্র ড. শাম্মা মহম্মদ। শনিবার সাংবাদিকদের শাম্মা বলেন, 'আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করতে অপারেশন গঙ্গা সফল হয়নি। কোনওমতে জোড়াতালি দিয়ে উদ্ধারকাজ চলছে। বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করার বদলে সরকার ব্যস্ত নিজেদের ঢাক পেটাতেই।'
যুদ্ধের উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ পেরিয়ে, কোনওমতে পড়ুয়ারা নিজ দায়িত্বেই ইউক্রেন সীমান্ত পেরোচ্ছেন। এত লড়াইয়ের পর তাঁরা দেশে ফেরার বিমানে উঠছেন। ক্লান্ত, অবসন্ন, ভারতীয়দের কথা উল্লেখ করে কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, এত কষ্ট করে আমাদের সন্তানরা বিমানে উঠছেন শুধু তাঁদের মা-বাবাকে দেখতে, নিজের দেশে নিজের বাড়িতে ফিরবেন বলে। কিন্তু তাঁদের মোদীজী জিন্দাবাদ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে!
প্রসঙ্গত, অপারেশন গঙ্গার তদারকি করতে চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলিতে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি দিতে জোর করার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধেই।
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ১১ হাজার ভারতীয়কে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ফিরে আসা ভারতীয়দের অভিজ্ঞতায় স্পষ্ট, ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাস বা কেন্দ্রের কারও সাহায্যই মেলেনি তাঁদের। উলটে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নিজেরাই ফিরেছেন দেশে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন