কেনিয়াতে আদানি গ্রুপের 'আদানি এনার্জি সলিউশ্যনস'-র গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প স্থগিত করল সে দেশের হাইকোর্ট। ৩০ বছরের জন্য চুক্তি হওয়ার কথা ছিল কেনিয়া ইলেকট্রিক্যাল ট্রান্সমিশন কোম্পানি বা 'KETRACO' এবং আদানি গোষ্ঠীর মধ্যে। প্রকল্প স্থগিতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি আদানি গ্রুপের।
বিদেশের মাটিতে ধাক্কা খেল আদানি গ্রুপের প্রকল্প। বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করা এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি মাসের শুরুতেই কেনিয়ার নিজস্ব বিদ্যুৎ সংস্থা কেনিয়া ইলেক্ট্রিক্যাল ট্রান্সমিশন কোম্পানি (KETRACO) ও আদানি এনার্জি সলিউশ্যনসের মধ্যে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ভিত্তিতে ৭৩৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার বিরোধিতা করে 'ল সোসাইটি অফ কেনিয়া'। সেই মামলার শুনানিতেই শুক্রবার রায় দেয় কেনিয়া হাইকোর্ট।
আদালতে মামলাকারীর অভিযোগ, এই চুক্তি কর্মীদের 'সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী'। ফলে প্রকল্পটি হতে দেওয়া উচিত নয়। আদালত জানায়, কেনিয়া সরকার এই বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে অগ্রসর হতে পারবেনা। যতদিন না আদালত ল সোসাইটির করা মামলার চূড়ান্ত রায় দান করছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে কেনিয়ায় পাশ হওয়া এক আইনে বলা হয়েছে, বেসরকারি সহযোগিতায় করা সরকারি প্রকল্পের অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার আমজনতার যোগদান বাধ্যতামূলক। আদানি গোষ্ঠীর সাথে চুক্তিতে এই শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ল সোসাইটির।
শুধু বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে চুক্তিই নয়, গত মাসে কেনিয়ার প্রধান বিমানবন্দর জোমো কেনিয়াট্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ৩০ বছরের জন্য লিজ নেওয়ার চুক্তিতেও ধাক্কা খায় আদানি গোষ্ঠী। ল সোসাইটি অফ কেনিয়া এবং কেনিয়ার মানবাধিকার কমিশন প্রকল্পটির বিরোধিতা করে স্থানীয় আদালতের দ্বারস্থ হয়। বিমানবন্দর অধিগ্রহণ হলে কর্মী ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল তারা।
আদালতে তারা জানায়, এই চুক্তি সম্পন্ন হলে বহু মানুষ কাজ হারাতে পারে, দেশের আর্থিক দিক থেকেও চুক্তিটি ঝুঁকিপূর্ণ। সরকার জানায়, চুক্তি মানে বিমানবন্দর বিক্রি করে দেওয়া নয়। বিমানবন্দরটির আধুনিকীকরণের প্রয়োজন রয়েছে। তারপরই কেনিয়ার আদালত প্রকল্পটির উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ আরোপ করে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন