পুলিৎজার জয়ী কাশ্মীরি চিত্র-সাংবাদিক সান্না ইরশাদ মাট্টুকে (Sanna Irshad Mattoo) বিদেশ ভ্রমণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে অবগত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (US)। বৃহস্পতিবার, একথা জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল (State Department Deputy Spokesperson Vedant Patel)।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মাট্টুকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে আটকানো হয়েছে। এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত এবং পুরো বিষয়টি আমার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমর্থন জানাতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেক্রেটারিও জানিয়েছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকারই হল মার্কিন-ভারত সম্পর্কের ভিত্তি।’
মঙ্গলবার রাতে, পুলিৎজার পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য বিমানে দিল্লি থেকে নিউইয়র্ক যেতে চেয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের চিত্র-সাংবাদিক সান্না ইরশাদ মাট্টু। অভিযোগ ওঠে, বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তাঁকে যেতে দেয়নি মোদী সরকার।
টুইটারে পুলিৎজার জয়ী চিত্র-সাংবাদিক মাট্টু জানান, ‘পুলিৎজার পুরষ্কার গ্রহণ করার জন্য নিউইয়র্কে যাচ্ছিলাম আমি। কিন্তু, দিল্লি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন দফতর আমাকে আটকে দিয়েছে। বৈধ মার্কিন ভিসা এবং টিকিট থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক ভ্রমণে বাধা দেওয়া হয়েছে।’
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার একই ঘটনার সাক্ষী হলেন ২৮ বছর এই চিত্র-সাংবাদিক। তিনি জানান, ‘কোনও কারণ বা কারণ দর্শানো ছাড়াই একই ঘটনা ঘটল।’
শ্রীনগরের বাসিন্দা সান্না আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ‘রয়টার্স’-এর চিত্র সাংবাদিক। ২০২২ সালের মে মাসে পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতে মহামারী করোনাকালের ভয়াবহ চিত্র তুলে রয়টার্সের যে টিম আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলেছিল, সেই টিমে ছিলেন কাশ্মীরি কন্যা সান্না।
এদিকে জানা যাচ্ছে, এক বিবৃতিতে- পুলিৎজার পুরষ্কার অনুষ্ঠানে মাট্টুকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে দেওয়ার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছিল ‘দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ (CPJ)।
CPJ এর এশিয়া প্রোগ্রামের কো-অডিনেটর বেহ লিহ ই (Beh Lih Yi) বলেছেন, ‘কাশ্মীরি সাংবাদিক সান্না ইরশাদ মাট্টু, যিনি পুলিৎজার জিতেছেন- তাঁর কাছে সমস্ত বৈধ ভ্রমণ নথি ছিল। তাঁকেই, সাংবাদিকতার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নিতে বিদেশ ভ্রমণে বাঁধা দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না।’
বেহ বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত স্বেচ্ছাচারী এবং বাড়াবাড়ি। ভারত সরকারকে অবিলম্বে কাশ্মীরের পরিস্থিতি তুলে করা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সব ধরনের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন