উত্তর আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসেই প্রায় ২৫০০-এরও বেশি মানুষ হয় মারা গিয়েছেন কিংবা নিখোঁজ হয়েছেন। এক্ষেত্রে গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটা বেড়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। গত বছর নির্দিষ্ট এই সময়ে মৃত বা নিখোঁজের সংখ্যা ছিল ১৬৮০। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এমনটাই জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থা UNHCR। সংস্থার নিউইয়র্ক দফতরের প্রধান রুভেন মেনিকদিয়েলা আরও জানিয়েছেন, “ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের জন্য উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীরা প্রতি পদক্ষেপে মৃত্যু ও মানবিক অধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি নেয়।”
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে রাষ্ট্রসংঘের বৈঠকে ইতালি ও জার্মানির প্রতিনিধিরা উত্তর আফ্রিকার দেশগুলি থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারপরেই কীভাবে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশগুলিতে অভিবাসন রোখা যায়, সেই বিষয়ে বিস্তারিত বৈঠক করেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অভ্যন্তরীন আধিকারিকরা। সেই বৈঠকেই রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (UNHCR)-এর নিউইয়র্ক দফতরের ডিরেক্টর মেনিকদিয়েলা নিরাপত্তা পরিষদকে জানান, “চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতিমধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষ ইউরোপে প্রবেশ করেছেন।”
মেনিকদিয়েলা আরও জানিয়েছেন, “মোট অভিবাসীদের মধ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ প্রবেশ করেছেন ইতালিতে। গোটা ২০২২ সালের তুলনায় চলতি বছরে এখনই ইতালিতে অভিবাসনের হার ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, বাকি অভিবাসীরা বিক্ষিপ্তভাবে গিয়েছেন গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস ও মালটায়।” রাষ্ট্রসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থার প্রধানের আরও বক্তব্য, “অভিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই তিউনিশিয়া ও লিবিয়া থেকে গোপনে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন। এবছর এখনও পর্যন্ত তিউনিশিয়া থেকে ১০২,০০০ জন এবং লিবিয়া থেকে ৪৫ হাজার মানুষ ইউরোপে ঢোকার জন্য ভূমধ্যসাগর পার করেছেন।”
অন্যদিকে, প্রায় ৩১ হাজার মানুষকে তিউনিশিয়া থেকে এবং ১০ হাজার ৬০০ জনকে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় আটকানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মেনিকদিয়েলা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন