গণ ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত জোটসঙ্গী জনতা দল সেকুলার প্রার্থী প্রোজ্জ্বল রেভান্নার হয়ে প্রচার করে বিপাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আন্তর্জাতিক স্তরের সংবাদমাধ্যমগুলিতে এই নিয়ে প্রতিবেদন হওয়ায়, বিশ্বব্যাপী মোদীর যে ভাবমূর্তি রয়েছে তাতে কিছুটা হলেও দাগ লাগবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। একাধিক বিদেশী সংবাদমাধ্যমও তেমনই দাবি করেছে।
লোকসভা নির্বাচনে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার জেডিএস দলের সাথে এবার জোট করেছে বিজেপি। দেবেগৌড়ার নাতি হাসন কেন্দ্রের প্রার্থী প্রোজ্জ্বল রেভান্নার হয়ে প্রচার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তারপর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় সংবাদপত্র 'হেরাল্ড সান'-র এক প্রতিবেদনের শিরোনাম দেওয়া হয় 'গণধর্ষকের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যোগ'। ভিতরে লেখা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এমন এক প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন যিনি কমপক্ষে ৪০০ জন মহিলাকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি যৌন হেনস্থার ভিডিও রেকর্ড করারও অভিযোগ রয়েছে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়, অভিযুক্ত রেভান্না নাকি ২৮০০টি ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন। ভয়ও দেখাতেন মহিলাদের। এমন এক অভিযুক্তের সাথে প্রধানমন্ত্রীর যোগ থাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
শুধু অস্ট্রেলিয় সংবাদপত্র নয়, সিএনএন, আলজাজিরার মতো সংবাদমাধ্যমেও নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে এই খবর ছাপা হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মোদীর ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও কালিমালিপ্ত হয়েছে।
প্রোজ্জ্বল রেভান্নার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছেন একাধিক মহিলা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে। ভোটপর্ব চলাকালীনই গোপন পেন ড্রাইভে থাকা ধর্ষণের সমস্ত ভিডিও কোনওভাবে ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিও ক্লিপগুলিতে দেখা যাচ্ছে মহিলাদের ওপর যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কর্ণাটক সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপের আর্জি জানায় রাজ্য মহিলা কমিশন।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রোজ্জ্বল। এমনকি যে সমস্ত ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাও বিকৃত করা হয়েছে বলেই জানান জনতা দল (সেকুলার)-র নেতা। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই ভারত ছেড়েছেন প্রোজ্জ্বল। একাধিক মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে রয়েছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ব্লু কর্ণার নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় প্রোজ্জ্বল রেভান্নার বাবা এইচডি রেভান্নারও নাম জড়িয়েছে। এফআইআর-এ তার নামও রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন