ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো মরক্কোর একাংশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কমপক্ষে ৬৩২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও আটকে রয়েছেন অনেকেই। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই জানা যাচ্ছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে কেঁপে ওঠে মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র মারাকাশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮.৫ কিমি গভীরে কম্পনের কেন্দ্রস্থল। তারপরই একের পর এক বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে থাকে। ঘুমন্ত অবস্থাতেই অনেকে প্রাণ হারান। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে ২৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু। তবে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
মারাকেশের এক বাসিন্দা জানান, হঠাৎই আমাদের বিল্ডিংটি ভয়ঙ্কর ভাবে কাঁপিতে থাকে। আমি ভিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাই। আমাদের বাড়ির বই এবং বিভিন্ন জিনিসপত্রে দেওয়াল থেকে পড়ে যায়। পুরনো প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়েছে। একাধিক রাস্তায় চড়া ফাটল দেখা দিয়েছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকজ্ঞাপন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি লেখেন, "মরক্কোয় ভূমিকম্পের কারণে মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই দুর্যোগের সময়ে আমি মরক্কোর জনগণের পাশে আছি। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাই। প্রার্থনা করি আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। ভারত এই কঠিন সময়ে মরক্কোর এই কঠিন সময়ে ভারত সবরকম সহায়তা করতে প্রস্তুত"।
শুধু মারাকেশই নয় উপকূলবর্তী শহর রাবাত, কাসাব্লাঙ্কা এবং এসাউইরাতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। এই এসাউইরা হচ্ছে মারাকেশ থেকে ২০০ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে ভূমিকম্পের বিস্তৃতি। এসাউইরার এক বাসিন্দা জানান, কম্পনের সময় অনেকেই চিৎকার করছিলেন। বাড়ি থেকে বেরিয়েও আসেন অনেকে। সকলেই আতঙ্কে ছিলাম।
শুধু মরক্কো নয়, পার্শ্ববর্তী দেশ আলজেরিয়াতেও কম্পন অনুভূত হয়। কিন্তু কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ১৯৮০ সালে আলজেরিয়ার এল আসনামে ৭.৩ মাত্রার ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প হয়েছিল। যার জেরে ২৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এবং ৩ লক্ষ মানুষ গৃহহীন পড়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে উত্তর-পূর্ব মরক্কোর আল হোসেইমা ভূ-কম্পনে কেঁপে উঠেছিল। সেই সময় ৬২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং প্রায় ১,০০০ জন আহত হয়েছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন