নিয়ারাগঙ্গ পাহাড়ের আগ্নেয়গিরিতে আচমকাই লাভা উদগিরণ শুরু হওয়ায় স্থানীয় গোমা শহরের পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিলো কঙ্গো প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ আচমকাই এই আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা উদগিরণ শুরু হয়।
পৃথিবীর বিপজ্জনক সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে নিয়ারাগঙ্গ পাহাড়ের এই আগ্নেয়গিরি পড়ে। এর আগে ২০০২ সালে এই আগ্নেয়গিরি থেকে লাগা উদগিরণ শুরু হওয়ায় ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিলো এবং প্রায় ১,২০,০০০ মানুষ গৃহহীন হয়েছিলেন। তারও আগে ১৯৭৭ সালে ৩৪৭০ মিটার (১১৩৮৫ ফুট) উচ্চতার এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের জেরে ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো।
পরিসংখ্যান অনুসারে ১৮৮২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই আগ্নেয়গিরি ৩৪ বার লাভা উদগিরণ করেছে। কঙ্গোতে মোট পাঁচটি আগ্নেয়গিরি আছে। যার মধ্যে সর্বাধিক উচ্চতার আগ্নেয়গিরির নাম বিসোকে। যার উচ্চতা ৩,৭১১ মিটার। এরপরেই স্থান নিয়ারাগঙ্গ-র। যার উচ্চতা ৩,৪৭০ মিটার। এছাড়াও নিয়ামুরাগুরা (৩,০৫৮ মিটার), মে-ইয়া-মোটো (২০০০ মিটার) এবং শিবিন্ডা (১,৪৬০ মিটার)।
এদিনের ঘটনা জানার পরেই অবিলম্বে ইউরোপ সফর বাতিল করে দেশে ফিরছেন রাষ্ট্রপতি ফেলিক্স সিসেকেদি।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানিয়েছেন – শনিবার দিনভর গোমা শহরের পূর্বাঞ্চল তীব্র সালফারের গন্ধে ভরে গেছিলো এবং শহরের ওপরের আকাশ লাল হয়ে ছিলো। এরপরেই সন্ধ্যে থেকে লাভা নির্গত হওয়া শুরু হয়। জানা গেছে লাভা গড়িয়ে যাচ্ছে রোয়ান্ডার দিকে। যদিও গভীর রাতের দিকে লাভা গতিপথ বদলে দক্ষিণ দিকে গোমা শহরের দিকে আসতে শুরু করে। আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন এই লাভা স্রোত গোমা শহরের মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত চলে আসবে।
লাভা শহরের দিকে এগিয়ে আসার খবর জানার পরেই গোমা শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল রাতেই শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গোমা শহরের আশপাশের অঞ্চল থেকে সকলেই সিটি সেন্টার অভিমুখে চলে আসেন। রোয়ান্ডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ইতিমধ্যেই কঙ্গো থেকে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে রোয়ান্ডায় চলে এসেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন