সংরক্ষণ তোলার দাবিতে বৃহস্পতিবার পুরো বাংলাদেশ জুড়ে সর্বাত্মক অবরোধ বা কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। যার ফলে আজ কার্যত স্তব্ধ ঢাকা-সহ গোটা দেশ। হাসপাতাল, সংবাদ মাধ্যম এবং জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ সমস্ত দোকান-বাজার, বেসরকারি দপ্তর।
সংরক্ষণ বিরোধী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ এবং আধাসেনার হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা অবসানের দাবি তুলে আজ গোট দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা এই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন।
বুধবার রাতে ফেসবুকে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের যৌথমঞ্চ, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ। আন্দোলকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জরুরি পরিষেবার আওতায় গণমাধ্যমের গাড়ি ও সংবাদপত্র পরিবহনের গাড়ি চলতে পারে।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের এই শাটডাউনের কর্মসূচিতে আজ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারা দেশজুড়ে ২২৯ আধাসেনা বাহিনী নামানো হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশের সংবাদ পত্র প্রথম আলো সূত্রে খবর, বুধবার রাত থেকেই ঢাকা-সহ সারা দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেটের ফোর-জি পরিষেবা। চালু রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেটের টু-জি পরিষেবা। তবে চালু আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা।
সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও শাসকদল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের সংঘর্ষে মঙ্গলবার বাংলাদেশের তিন শহর— ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রংপুরে মোট ছ’জনের মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার ছুটির দিনেও ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র বিক্ষোভ, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, গায়েবানা জানাজা, কফিন মিছিল এবং দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আন্দোলনকারীদের কফিনমিছিলের জেরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। আন্দোলনকারীদের মিছিল রুখতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছাড়ে। যার জেরে মেয়ে-সহ ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়া ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে খবর। প্রথম আলোর তথ্য অনুসারে, বুধবার রাত ১১ টা পর্যন্ত এই আন্দোলনের জেরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৩৫ জন চিকিৎসাধীনে রয়েছেন।
আরও জানা গেছে, বুধবার ঢাকা-সহ দেশের অন্তত ১০টি জেলায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া অন্তত ১০টি জায়গায় সড়ক, মহাসড়ক এবং দুই জায়গায় রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
আজ সকালে ঢাকার মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে শিক্ষার্থীদের। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে।
ঢাকার মিরপুরেও আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন