শুক্রবার ১২ জুলাই নেপালের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দাহাল ‘প্রচণ্ড’কে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন ‘প্রচণ্ড’। আগামীকালের আস্থা ভোটে তাঁর পরাজয় নিশ্চিত বলেই মনে করছে সে দেশের রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, গত ১৬ বছরের ইতিহাসে ১৩ বার সরকার বদল হয়েছে ছোটো এই পার্বত্য রাষ্ট্রে।
সংসদে আগামীকালের আস্থা ভোটের আগেই নেপালি কংগ্রেস এবং সিপিএন-ইউএমএল জোট বেঁধে প্রচন্ড-কে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সরকার গঠনের বিষয়ে বুধবার থেকে আলোচনা শুরু করেছে। জানা গেছে, নেপালি কংগ্রেস এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল – ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) নতুন জোট গঠনের বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে। আলোচনার সূত্র অনুসারে, নতুন সরকার গঠন হলে প্রথম দফায় দেড় বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন কে পি শর্মা ওলি।
কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সিপিএন-ইউএমএল বর্তমান জোট সরকারের বড়ো শরিক ছিল। গত সপ্তাহেই যে দল প্রচন্ড-র সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়। যার জেরে রাজনৈতিক অস্থিরতার শুরু হয় নেপালে।
সমর্থন প্রত্যাহারের আগেই নেপালি কংগ্রেসের প্রধান শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে আলোচনায় বসেন সিপিএন-ইউএমএল প্রধান কে পি শর্মা ওলি। এই বৈঠকের পরেই প্রচন্ড-কে ক্ষমতাচ্যুত করতে বর্তমান জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে কে পি শর্মা ওলির দল।
গত সপ্তাহে সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পরেই প্রচন্ড-র ইস্তফা দাবি করেন কে পি শর্মা ওলি। যদিও ইস্তফা দিতে অস্বীকার করে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হবার কথা জানান প্রচণ্ড। নেপালের রাজনৈতিক মহলের সূত্র অনুসারে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৮ জনের সমর্থন কোনোভাবেই প্রচন্ডের পক্ষ পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি সর্বাধিক ৬৯ জনের সমর্থন জোগাড় করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আগামীকাল নেপালের সরকারের পতন একপ্রকার নিশ্চিত এবং আগামী রবিবারের মধ্যেই নতুন সরকার গঠিত হবে।
অন্যদিকে আজই সকালে নেপালের সোশ্যালিস্ট ফ্রন্টভুক্ত দলগুলির ডাকে প্রধানমন্ত্রী এবং সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর প্রধান পুস্প কুমার দহাল প্রচণ্ডর বাড়িতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের শেষে, নেপাল সমাজবাদী পার্টির চেয়ারম্যান মহেন্দ্র রায় যাদব সংবাদমাধ্যমে জানান, কীভাবে সোশ্যালিস্ট ফ্রন্টকে সক্রিয় করা যায় সে সম্পর্কে নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দেশের সাতটি প্রদেশেই ফ্রন্ট সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পুষ্প কমল দাহল 'প্রচন্ড', সিপিএন (ইউএস) এর সভাপতি মাধব কুমার নেপাল এবং ঝালনাথ খানাল, সিপিএন সাধারণ সম্পাদক নেত্র বিক্রম চাঁদ বিপ্লব এবং নেপাল সমাজবাদী পার্টির সভাপতি যাদব সহ নেতৃত্ব আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে সর্বশেষ রাজনৈতিক অগ্রগতি সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
নেপালের ২৭৫ আসন বিশিষ্ট সংসদে প্রচন্ডের দলের প্রতিনিধির সংখ্যা ৩২। নেপালি কংগ্রেসের প্রতিনিধির সংখ্যা ৮৯। সিপিএন-ইউএমএল-এর প্রতিনিধির সংখ্যা ৭৮। এই দুই রাজনৈতিক দলের মোট প্রতিনিধির সংখ্যা ১৬৭। যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১৩৮ আসনের চেয়ে অনেকটাই বেশি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন