নিউইয়র্ক টাইমসের প্রায় ১,১০০ সাংবাদিক এবং অন্যান্য কর্মীরা বৃহস্পতিবার থেকে ২৪ ঘন্টার জন্য ধর্মঘটে শামিল হয়েছে। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটাই এই সংবাদপত্রে বৃহত্তম শ্রম বিরোধ। জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে চালিয়ে যাওয়া চুক্তির আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় কর্মীদের এই সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী এই সংস্থার গ্রাহক সংখ্যা ৯০ লক্ষেরও বেশি।
ম্যানহাটনের টাইমস স্কোয়ারের কাছে সংবাদপত্রের অফিসের বাইরে শত শত রিপোর্টার, সম্পাদক, ফটোগ্রাফার এবং অন্যান্য কর্মচারীরা ধর্মঘটের সমর্থনে পিকেটিং করে। বৃহস্পতিবার শুরু এই ধর্মঘট চলবে শুক্রবার রাত ১২.০১ পর্যন্ত। অতীতে এই সংস্থায় ছোটো ছোটো কর্মবিরতি হলেও এবারের ধর্মঘট বিরাট আকার ধারণ করেছে। এর আগে ১৯৭৮ সালে ধর্মঘটের কারণে এই সংস্থার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।
নিউইয়র্ক টাইমস সংস্থার সঙ্গে কর্মীদের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২১ সালের মার্চে। যার পর থেকে বেতন বৃদ্ধি সহ একাধিক দাবিতে কর্মচারীরা আন্দোলন চালাচ্ছেন। নিউইয়র্কের নিউজগিল্ড বুধবার সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ম্যারাথন আলোচনায় দুই পক্ষ কোনো মীমাংসা সূত্রে না পৌঁছানোর পর ধর্মঘটে নামে সংস্থার কর্মীরা। ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে সংস্থার পারফরমেন্স রিভিউ পদ্ধতি বর্ণবিদ্বেষ দোষে দুষ্ট।
গতকাল সংবাদকর্মীদের সমাবেশে পুলিতজার পুরস্কার বিজয়ী অনুসন্ধানী সাংবাদিক নিকোল হান্না জোনস বলেন, "আমি আমাদের কোম্পানিতে গভীরভাবে হতাশ।” "নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো জায়গায় কাজ করার জন্য আপনাকে আর্থিকভাবে সংগ্রাম করতে হবে না, আপনার অবস্থান যাই হোক না কেন।"
একজন ফিনান্স রিপোর্টার এবং ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেওয়া স্ট্যাসি কাউলি জানিয়েছেন, তিনি এবং অন্যান্য কর্মচারীরা ধর্মঘটে অংশ নেওয়ায় অনেক নিউজরুম বন্ধ ছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য হারে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে টাইমসের। সংস্থার সাম্প্রতিক বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে ২০২২ সালের জন্য $৩২০ মিলিয়ন এবং $৩৩০ মিলিয়নের মধ্যে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ অপারেটিং মুনাফা অনুমান করা হচ্ছে। যদিও, টাইমসের প্রধান নির্বাহী মেরেডিথ কোপিট লেভিয়েন কোম্পানিব্যাপী এক ইমেলে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এক দশক আগে মুনাফা যা ছিল সেই জায়গায় নেই।
গ্যানেট, সিএনএন এবং ডিজিটাল মিডিয়া আউটলেট BuzzFeed সহ অন্যান্য মার্কিন মিডিয়া সংস্থাগুলি কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থা এবং বিজ্ঞাপনে টানাপড়েনের কথা উল্লেখ করে কর্মী ছাঁটাই করার কারণে এই সংস্থার কর্মীরা ধর্মঘটে শামিল হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন