রাজনৈতিক নয়, সামরিক ব্যর্থতার জেরেই ১৯৭১ সালে পরাজয় ঘটে পাকিস্থানের। হাতছাড়া হয় পূর্ব পাকিস্থান (বর্তমানে বাংলাদেশ)। যুদ্ধবন্দী হয় ৯০ হাজার পাক সেনা। এর ফলে জুলফিকার আলী ভুট্টো (Zulfikar Ali Bhutto) সরকারকে বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। বৃহস্পতিবার, এমনই দাবি করেছেন পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী (Foreign Minister) বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি (Bilawal Bhutto-Zardari)।
গত ২৪ নভেম্বর, পাকিস্তানের সদ্য প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া বলেন, 'পূর্ব পাকিস্তান (East Pakistan) আমরা হারিয়ে ছিলাম রাজনৈতিক ভুলের কারণে।'
সেনাঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'আমি একটি তথ্য সংশোধন করে দিতে চাই। তা হল, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, ছিল রাজনৈতিক ব্যর্থতা। লড়াইরত সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, বরং তা ছিল মাত্র ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী।' আর এজন্য, তৎকালীন ক্ষমতাসীন জুলফিকার আলি ভুট্টোর নিয়ন্ত্রণাধীন পিপিপি (PPP) দলকে দায়ী করেন তিনি।
তবে, বৃহস্পতিবার, বাজওয়ারের এই অভিযোগে উড়িয়ে দিয়েছেন বিলাওয়াল। তিনি দাবি করেন, '১৯৭১ সালে যখন জুলফিকার আলি ভুট্টোর হাতে ক্ষমতা এসেছিল ততক্ষণে মানসিক ভাবে যুদ্ধ হেরে গিয়েছিল পাক সেনারা। তাঁদের সেই হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছিলেন জুলফিকার ভুট্টো। এছাড়াও পূর্ব পাকিস্তানে শত্রুপক্ষের হাতে বন্দি ৯০ হাজার সেনাকে ফেরানোর ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। ভুট্টোর উদ্যোগেই আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছিল। আর, এটি সম্ভব হয়েছে- সদার্থক, আশা-ব্যাঞ্জক রাজনীতির কারণেই।'
পাকিস্থানের অন্যতম সংবাদ মাধ্যম - দ্য ডন (The Dawn) জানিয়েছে, প্রায় এক ঘণ্টার বেশি বক্তৃতায় এদিন দল হিসাবে 'পাকিস্থান পিপুলস পার্টি' (PPP)-র ইতিহাসের কথা তুলে করেন বিলাওয়াল ভুট্টো।
তিনি বলেন, দেশের জন্যই তাঁর দল থেকে দুই নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে 'উৎসর্গ' (sacrificed) করেছে। এমনকি, তাদের পরিবারের সদস্যদেরও রেহাই দেওয়া হয়নি। গণতন্ত্রকে দুর্বল করা এবং 'পুতুল নেতৃত্বকে' শক্তিশালী করার জন্য তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব পাকিস্তান হোক বা অন্য কোনও বিষয়ে বিতর্ক- সকল ক্ষেত্রেই পাকিস্থানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সম্প্রতি ইমরান খানের ক্ষমতচ্যূত হওয়ার পিছনেই সেনার হাত রয়েছে বলে খোদ অভিযোগ করেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাজনীতিবিদ। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাক সেনাবাহিনী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন