ইতিমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। তিনি যে ক্ষমতা হারাচ্ছেন, আগে থেকেই তাঁর আঁচ পেয়ে এদিন তিনি আর হাজিরা দেননি। ইমরান খানের পর সেদেশের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কোনও ঘোষণা না হলেও অন্যতম হিসেবে উঠে এসেছে শাহবাজ শরিফের নাম।
তিনিই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। তাঁর দিকেই প্রচারের আলো ঘুরে গিয়েছে। প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে নাটকের পর অবশেষে অবসান হল ইমরান যুগের। আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেন তিনি। শনিবার দিনভর টানটান নাটক। অপশাসন, সরকারি টাকা বেলাগাম খরচ-এসবই অন্তরায় হয়ে ওঠে। তিনি প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি কিনা আস্থা ভোটে পরাজিত হলেন।
কে এই শাহবাজ?
আসল নাম মিয়া মহম্মদ শাহবাজ শরিফ। লাহোরের এক ব্যবসায়ী পরিবারের ১৯৫০ সালে জন্ম নেন শাহবাজ। কিন্তু তার সব থেকে বড় পরিচয় তিনি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী তথা মুসলিম লিগের জনপ্রিয় নেতা নওয়াজ শরিফের ভাই। যেদিন থেকে ইমরান সরকারের পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সেদিন থেকেই পাকিস্তানের রাজনীতিতে হাওয়ায় ভাসছিল শাহবাজের নাম।
তবে নওয়াজ শরিফের ভাই বলে নয়, তিনি নিজস্ব দক্ষতাতেই প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন। পাক রাজনীতিতে তিনি ইতিমধ্যেই সামলে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রিত্ত্বের দায়িত্ব। পাশাপাশি সামলেছেন প্রশাসনিক পদ। সবচেয়ে বেশি সময়ের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। পরপর তিনবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন পঞ্জাবের। নওয়াজ শরিফ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হলে তাঁর গুরুত্ব বেড়ে যায় অনেকটাই। ধীরে ধীরে পাকিস্তানের বিরোধী দলের সর্বোচ্চ নেতা হয়ে ওঠেন। মুসলিম লিগের প্রেসিডেন্টও হন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট শাহবাজ যখন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য হন, তখন প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার ছিলেন তিনি। এদিকে তার রাজনৈতিক কেরিয়ার যে সুগম ছিল, তা নয় একেবারেই। পারভেজ মুশারফের আমলে জেলবন্দি হন। পরে দেশত্যাগ করে সৌদি আরবে থিতু হওয়া। ২০০৭-এ দেশে ফিরে পরের বছরে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০২০ সালে তাঁকে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
ইমরানের ছেড়ে যাওয়া গদিতে তিনিই বসতে চলেছেন। আগামী ১২ এপ্রিল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশনে নয়া পাক প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন