কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর এক দফা দাবি তুলে ফের উত্তাল বাংলাদেশ। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নয়া দাবি হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। যার জেরে রবিবার দিনভর দেশের একাধিক মন্ত্রী, শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে এখনও পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে রবিবার নতুন করে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। এদিন হাজার হাজার আন্দোলনকারীরা রাজধানী ঢাকার রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান। বাংলাদেশী সংবাদ পত্র প্রথম আলো সূত্রে খবর, এদিন ছাত্ররা ঢাকার একাধিক মন্ত্রী, আওয়ামী লিগের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশদের। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে রবিবার ৯৮ জনের মৃত্যু হয় বলে প্রথম আলো সূত্রে খবর।
রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রবিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করে সরকার। পাশাপাশি, সোমবার থেকে তিন দিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়। এছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। তবে কেবলমাত্র মোবাইলের ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। চলছে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। ফেসবুক, এক্সের মতো সমাজমাধ্যম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, যাঁরা হিংসা চালাচ্ছেন, তাঁরা কেউই ছাত্র নন, তাঁরা সন্ত্রাসবাদী।
এদিকে, রবিবারের পর সোমবারেরও ফের উত্তাল বাংলাদেশ। আজ দেশজুড়ে আন্দোলন মঞ্চ লং মার্চের ডাক দিয়েছিল। এই কর্মসূচিকে বলা হচ্ছে ‘মার্চ টু ঢাকা’, যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘ঢাকা চলো’। এদিন সকালে লং মার্চে যোগ দিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন কিছু ছাত্রছাত্রী। তাঁদের সরাতে কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেডও। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে সোমবার আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১-এ।
অন্যদিকে, দেশজুড়ে কার্ফু জারি থাকায় এবং তিনদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করায় সোমবার সকাল থেকে ঢাকা শহরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি অনেক কম। ঢাকা শহর জুড়ে চলছে পুলিশের টহলদারী। জানা যাচ্ছে, সোমবার ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। আন্দোলনকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন