সমস্ত জল্পনার অবসান। অবশেষে রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার পেতে চলেছে ইরান। ইরানের ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সে দেশের সংবাদ সংস্থা তাসনিমকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সুখোই-৩৫ এবং এমআই-২৮ হেলিকপ্টার নিয়ে রাশিয়া ও ইরানের চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। সেগুলি তেহরানের হাতে পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই ইরান-রাশিয়া ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হয়েছে। একদিকে পশ্চিমা দুনিয়া যখন ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে সামরিক সাহায্য করে চলেছে, অন্যদিকে রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল ইরান। ইরানের তৈরি ‘কামিকাজে’ ড্রোন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে। স্বল্পমূল্যের এই আত্মঘাতী ড্রোন ইউক্রেনের পশ্চিমা দুনিয়ার থেকে পাওয়া বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।
এই মুহূর্তে ইরানের বায়ুসেনার প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে বেড়ে চলা অশান্তির মাঝে তাই নিজেদের আকাশপথ আরো সুরক্ষিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছে তেহরান। যদিও ২০১৮ সালে ইরাল ঘোষণা করেছিল – ‘কাওশার’ নামে একেবারে দেশীয় প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান তৈরি শুরু করেছে। কিন্তু সেই প্রকল্পে হাতে গোনা কয়েকটি যুদ্ধবিমান তৈরি হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে আমেরিকান যুদ্ধবিমান এফ-৫ এর প্রযুক্তি হুবহু নকল করা হয়েছে এই যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে। যেহেতু ষাটের দশকে এই যুদ্ধবিমান ইরানেই প্রস্তুত হত।
পাশাপাশি ইজরায়েলের সঙ্গে ক্রমশই শত্রুতা বাড়ছে ইরানের। ইজরায়েলের বরাবর অভিযোগ – লেবাননের ইজরায়েল বিরোধী সামরিক গোষ্ঠী হিজবুল্লা, গাজার হামাস ও সিরিয়ার একাধিক সামরিক শিয়া গোষ্ঠীকে ইরান মদত করছে।
এই মুহূর্তে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে ব্যস্ত ইজরায়েল। রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে ব্যস্ত। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেমন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমি দুনিয়া। ইরানও অনেক আগে থেকেই পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার মুখে। এই পরিস্থিতিতে ইরানের হাতে রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার চলে আসাটা খুবই ইঙ্গিতবাহী। ইরানের বায়ুসেনার হাতে সুখোই-৩৫ পৌঁছালে তা যে ইজরায়েলের পক্ষে স্বস্তিদায়ক হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন