জার্মানি ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি। কিন্তু প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রায় অর্ধেক রাশিয়া থেকে আমদানি করে। সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ শুরু হলে জার্মানি সহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও তার সহযোগী রাষ্ট্ররা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়। আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক পরিষেবা মাধ্যম ‘সুইফট’ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হয়।
এরপর রাশিয়া ঘোষণা করেছে – ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে প্রাকৃতিক গ্যাস পেতে হলে ‘রুবল’-এ পেমেন্ট করতে হবে। ডলার কিংবা ইউরো দিয়ে আর গ্যাস পাওয়া যাবে না। এই মর্মে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশিকা জারি করেছেন। রাশিয়ার এই ঘোষণায় যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছে জার্মানি সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য রাষ্ট্র।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে জার্মানি ৫৫ শতাংশ এবং ২০২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৪০ শতাংশ গ্যাস রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে। বোঝাই যাচ্ছে প্রয়োজনীয় গ্যাসের জন্য জার্মানি প্রবলভাবে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। জার্মানি সরকারীভাবে জানিয়েছে ২০২৪ সালের আগে কোনোভাবেই তারা এর বিকল্পের ব্যবস্থা করতে পারবে না। সেই পরিকাঠামো এখনও নেই তাদের দেশে।
এমতাবস্থায়, জার্মানি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, প্রয়োজন ছাড়া অযথা প্রাকৃতিক গ্যাস যেন ব্যবহার না করেন তাঁরা। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য “গ্যাস রেশনিং” করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমানে সরবরাহে কোনো বাধা নেই। তবুও রাশিয়ার যে কোনো ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বাড়াতে হবে।”
সোমবার গ্রুপ অফ সেভেন (G7) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি চুক্তি লঙ্ঘনের উল্লেখ করে রুবেলে গ্যাস সরবরাহের জন্য পুতিনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার, পুতিন একটি ডিক্রি স্বাক্ষর করেছেন যাতে রাশিয়ান গ্যাস আমদানিকারক দেশগুলিকে ১ এপ্রিল থেকে রুবেলে অর্থ প্রদান করা এবং যারা মানবে না তাদের চুক্তি বাতিল করার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক গ্যাস নিতে গেলে রুবেল দিয়েই নিতে হবে, নয়তো গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন