আইএমএফ (IMF)-র এক শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞাগুলি বজায় থাকলে মার্কিন ডলারের আধিপত্য হ্রাস হতে পারে এবং বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল মুদ্রা (ক্রিপ্টো কারেন্সি) গ্রহণকে উত্সাহিত করতে পারে। কঠোর পশ্চিমী আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার প্রায় অর্ধেক বৈদেশিক সম্পদ (৩০০ বিলিয়ন ডলার) অকার্যকারী হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলারকেই বিবেচনা করা হয়। যদিও ডলারের উপর নির্ভরশীলতা কতটা সুরক্ষিত হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা শুরু করেছে বেশ কয়েকটি দেশ। রাশিয়ার সাথে রুপি-রুবল বাণিজ্যিক লেনদেন করা যায় কিনা বিবেচনা করছে ভারত। অন্যদিকে সৌদি আরব থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার ব্যাপারে ডলারকে এড়িয়ে ‘ইউয়ান’ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। ভারত ও চীন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল আমাদানিকারী দেশ। এক্ষেত্রে ডলারকে এড়িয়ে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করলে ডলারের একাধিপত্যে যে অশনি সংকেত ডেকে আনবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
IMF-এর প্রথম ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গীতা গোপীনাথ বলেছেন, কিছু দেশ ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিজস্ব মুদ্রায় করা যায় কিনা তা পুনরায় আলোচনা শুরু করছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি সাক্ষাত্কারে গোপীনাথ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতেও ডলারের আধিপত্য থাকবে, তবে কিছু ব্যবসায়িক অংশীদারদের মধ্যে ‘ছোট মুদ্রা ব্লক’ উদ্ভূত হতে শুরু করেছে।”
ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া-র ক্লিনিকাল ফাইন্যান্স এবং ব্যবসায়িক অর্থনীতির অধ্যাপক বাইজু চেনের মতে, ৭০টিরও বেশি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানকে (চীনের মুদ্রা) রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে ধরে রাখে এবং অনেক আফ্রিকান দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ নিয়মিত লেনদেনের জন্য চীনা মুদ্রা ব্যবহার করে। তাঁর কথায় – “কিছু দেশ মনে করে যে ডলারের প্রভাবে তাদের অর্থনীতি মার্কিন নীতির কাছে পণবন্দী হতে পারে এবং দেশগুলি তাদের ঝুঁকির বৈচিত্র্য আনতে চায়।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন