ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের (National Assembly) নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে প্রথম হয়েছে অতি-দক্ষিণপন্থী দল ‘ন্যাশনাল র্যালি’ (RN)। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বামপন্থী জোট ‘নিউ পপুলার ফ্রন্ট’ (NFP)। তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে - প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী এনসেম্বল জোট।
নির্বাচনী সমীক্ষা সংস্থা IFOP, Ipsos, OpinionWay এবং Elabe–র মতে মেরিন লি পেনের নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশনাল র্যালি’ প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়েছে। বামপন্থী ‘নিউ পপুলার ফ্রন্ট’ (NFP) জোট প্রায় ২৯ শতাংশ এবং প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী এনসেম্বল জোট প্রায় ২০.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
প্রথম রাউন্ডে সমস্ত আসনে গণনা শেষ হওয়ার পর দেখা যায় অতি-দক্ষিণপন্থীরা ২৯৭টি আসনে, বামপন্থীরা ১৪৯টি আসনে এবং মধ্যপন্থীরা মাত্র ৫৮টি আসনে এগিয়ে। পাশাপাশি ডানপন্থী রিপাবলিকানরা ৩৩টি আসনে এগিয়ে।
তবে এই ফলাফল চূড়ান্ত নয়। ৭ জুলাই দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনের পর জানা যাবে কোন দলের কতজন প্রতিনিধি ফ্রান্সের পার্লামেন্টে নির্বাচিত হলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মূলত ৩টি উপায়ে ফ্রান্সের নিম্নকক্ষে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়। প্রথমত, প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে যদি কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট পান, তাহলে তাঁকে সরাসরি জয়ী ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয়ত, কোনও প্রার্থীই যদি ৫০ শতাংশ ভোট না পান – সেক্ষেত্রে, প্রথম রাউন্ডের সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন হবে। তৃতীয়ত, প্রথম রাউন্ডে যে প্রার্থী অন্তত ১২.৫ শতাংশ ভোট পাবেন – তিনি দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন।
এই মুহূর্তে, ফ্রান্সে যা পরিস্থিতি তাতে দ্বিতীয় রাউন্ডে সরাসরি লড়াই হতে চলেছে অতি-দক্ষিণপন্থীদের সাথে বামপন্থী জোটের। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী দল দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াই থেকে ছিটকে গেলেও নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে চলেছে। মধ্যপন্থীদের সমর্থন যেদিকে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে তারাই শেষ হাসি হাসবে। অতি-দক্ষিণপন্থী ‘ন্যাশনাল র্যালি’কে আটকাতে ইতিমধ্যেই বামপন্থী ও মধ্যপন্থীদের মধ্যে সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বামপন্থী ‘নিউ পপুলার ফ্রন্ট’-র অন্যতম নেতা জঁ-লুক মেলশোঁ জানিয়েছেন – তারা আগামী রবিবার দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের আগে একটি কৌশলগত জোট গঠন করবে মধ্যপন্থীদের সাথে এবং প্রথম রাউন্ডে তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহার করা হবে, যাতে অতি-দক্ষিণপন্থী বিরোধী ভোট সংগঠিতভাবে একটি মধ্য-বাম জোটের প্রার্থীর পক্ষেই যায়। একই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও। তিনি বলেছেন – ‘অতি-দক্ষিণপন্থাকে রুখতে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক জোট এখন সময়ের দাবি’।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন