বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষের পদত্যাগের পরেও, ক্ষান্ত হয়নি জনগণের ক্ষোভ। দেশজুড়ে খাদ্য, তেল ও বিদ্যুতের ভয়াবহ সঙ্কটের প্রতিবাদে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের বিরুদ্ধেও তাঁরা এবার রাস্তায় নেমেছেন। তবে বিক্ষোভ সহিসতায় রূপ নিয়েছে। জনরোষে নিহত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার এক সাংসদসহ ৫ জন। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই শতাধিক।
কয়েক মাস আগে থেকেই শ্রীলঙ্কায় প্রায় অন্ধকার নেমে এসেছে। তেলের অভাবে প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল শ্রীলঙ্কায়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল খাদ্য পণ্য ও ওষুধ সঙ্কট। এই অবস্থায় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে রাস্তায় নেমেছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। সূত্রের খবর, সোমবার রাতে রাজাপক্ষের বিরোধী শিবিরের সমর্থকেরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। বাসভবনের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে তাঁরা। পরে বাসভবনের বাইরে থাকা গাড়ী জ্বালিয়ে দেয় তারা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়, জলকামান ব্যবহার করে। কিন্তু তাতেও অবস্থা আয়ত্তে না আসায় ঘটনাস্থলে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। দেশজুড়ে জারি করা কারফিউ বুধবার সকাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। তিনি শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, আশঙ্কার বিষয় এই যে, শ্রীলঙ্কার অনেক তামিলই দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুমোদন দাবি করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন। জানা যাচ্ছে, তা এখনও অবধি মেলেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর আগেও এই ধরণের কোনো অর্থনৈতিক সঙ্কট বা রাজনৈতিক অচলাবস্থার সম্মুখীন হয়নি শ্রীলঙ্কা। এই পরিস্থিতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবে শ্রীলঙ্কা, তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন