ভারতের পর এবার বিশ্বের বাজারেও আকাশ ছুঁয়েছে চিনির মূল্য। আন্তর্জাতিক বাজারে শেষ ১২ বছরের মধ্যে চিনির মূল্য সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রতি পাউন্ডে বিশ্বব্যাপী চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। ভারতের রপ্তানি কমিয়ে দেওয়া এবং ব্রাজিলের বন্দরগুলিতে সমস্যার কারণে রপ্তানি প্রায় বন্ধ হওয়া আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বৃদ্ধির মূল কারণ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরে অনিয়মিত খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য অন্যান্য ফসলের মতো আখের ফসলও যথেষ্ট কম হয়েছে ভারতে। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে চিনির উৎপাদনে। এমনিতে বিশ্বের মধ্যে চিনি উৎপাদক দেশ হিসেবে ভারত শীর্ষস্থানে থাকলেও এবছর দেশে চিনি উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা গিয়েছে। যে কারণে দেশীয় বাজারে চিনির দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছিল। বাণিজ্যিক হিসেব অনুযায়ী, ভারতে চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৫-৮ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। তবে আখের ফলন কমার দরুন আগামী মরশুমে চিনির দাম আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
উৎসবের মরশুমে দেশে চিনির চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দেশের বাজারে চিনির দামে লাগাম পরাতে বিদেশে চিনি রপ্তানির পরিমাণে রাশ টেনেছিল ভারত সরকার। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে দেশের চিনিকলগুলি মোট ১১.১ মিলিয়ন টন চিনি বিদেশে রপ্তানি করলেও ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কেন্দ্র চিনিকলগুলিকে শুধুমাত্র ৬.২ মিলিয়ন চিনিই বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ চিনি রপ্তানিকারক হিসেবে ভারত রপ্তানিতে হঠাৎ রাশ টানায় এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দামে।
অন্যদিকে, ব্রাজিল বিশ্বে চিনি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে প্রথম স্থানে থাকলেও গত বেশ কিছুদিন ধরে সে দেশের বন্দরগুলিতে জাহাজে মাল তোলার সময় বাড়ায় মালভর্তি জাহাজ বন্দর দেরিতে ছাড়ায় সময় মতো আন্তর্জাতিক বাজারে চিনি সরবরাহ করতে পারছে না ব্রাজিল। ফলে রপ্তানির জন্য মজুত করা চিনি বন্দরেই পড়ে রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুটি চিনি রপ্তানিকারক দেশই তাদের রপ্তানি প্রায় অর্ধেক করে দেওয়ায় গত ১৫ দিনে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়ে গিয়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন