রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর এক কনসার্ট হলে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মৃতের সংখ্যা ৬০ ছাড়ালো। আহত প্রায় ১৫০ জন। আততায়ীরা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলেই রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আইএস জঙ্গি সংগঠন।
রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রকাস সিটিতে আচমকাই হামলা চালায় ৫ জঙ্গি। আততায়ীরা সেনাবাহিনীর পোশাকে থাকায় প্রাথমিকভাবে কেউই বুঝে উঠতে পারেনি বিষয়টি। ১০-১৫ মিনিট এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে তারা। আতঙ্কে চারিদিকে ছুটতে থাকেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আইএস।
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো জানান, পাঁচ শিশুসহ ১৪৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
মস্কোয় জঙ্গিহানার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "মস্কোয় এই জঘন্য জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। আক্রান্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। এই দুঃখের সময় ভারত সরকার রাশিয়ার পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছে"।
মস্কোয় সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স, স্পেন এবং ইটালির মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিও। পাশাপাশি জঙ্গি হামলাকে ভয়ঙ্কর বলে চিহ্নিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
তবে মস্কোতে আততায়ী হামলা এই নতুন নয়। একটু ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যাবে আগেও হয়েছে প্রাণহানি।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল মস্কোর ডোমোদেডোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেই হামলায় প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১০ সালে মস্কোর একটি সাবওয়েতে দুই মহিলা আত্মঘাতী বোমা হামলা করেছিল। যার জেরে ৪০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
২০০৪ সালেও বোমা হামলা হয়েছিল মস্কোর একটি সাবওয়েতে। ফেব্রুয়ারি মাসের এক ব্যস্ততম সকালে আততায়ীরা বস্তাবন্দী বোমা ফেলে চলে যায়। বিস্ফোরণে ৪১ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছিল।
২০০২ সালে রাশিয়ার এক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর হামলায় নিহত হয়েছিল প্রায় ১৩০ জন। ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ-পূর্ব মস্কোর একটি আবাসনে বোমা বিস্ফোরণ হয়। সেই সময় ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন