চলমান ইউক্রেন সংকটের পটভূমিতে রাশিয়ার তেল না কেনার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে চাপ দিয়ে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে তারা গত সপ্তাহে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি ৪৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রতিদিন ১,০০,০০০ ব্যারেল বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি মিখাইল পপভ। সমালোচকরা বলছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থে কম দামে অপরিশোধিত তেল কিনছে, অথচ ইউরোপীয় মিত্রদের চাপে রাখছে।
রাশিয়ান কর্মকর্তার মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এইরকম “আশ্চর্য আচরণই” ইউরোরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির প্রাপ্য। তাছাড়া, হোয়াইট হাউস আমেরিকান সংস্থাগুলিকে রাশিয়া থেকে খনিজ সার রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে, সেগুলিকে প্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার আলোপ করছে। যদিও ইউরোপ অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল।
রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর আমেরিকা ও ব্রিটেন উভয় দেশই চাপ দিয়ে চলেছে। ব্রিটেন ঘোষণা করেছে যে তারা বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার কৌশল খুব পরিষ্কার। রাশিয়া থেকে কম দামে অপরিশোধিত তেল কিনে তা ইউরোপে চড়া দামে বিক্রি করাই উদ্দেশ্য। এরপফলে ইউরোপীয় সম্পদ আরও বেশি করে আমেরিকায় প্রবাহিত হবে এবং ইউরোপে ডলারের চাহিদা বাড়বে। ইউরোর উপর ডলারের একাধিপত্য বজায় থাকবে তাতে।
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি গত মাসে প্রায় ১৬ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। যার সিংহভাগ রপ্তানি হয়েছে ইউরোপে। এই মুহূর্তে ইউরোপে মার্কিন এলএনজি উচ্চ চাহিদা রয়েছে। কারণ ইউরোপীয় দেশগুলি রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে যে, ইউরোপ টানা চার মাস ধরে মার্কিন এলএনজির শীর্ষ আমদানিকারক। যা মার্কিন মোট এলএনজি রপ্তানির প্রায় ৬৫ শতাংশ।
সম্প্রতি, একটি যৌথ চুক্তিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বছর ইউরোপে কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ঘনমিটার বেশি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করবে বলে ঘোষণা করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন