গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হল সনবাদ্মাধ্যম। অথচ বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে সবথেকে বিপদজ্জনক জায়গায় রয়েছে সেই সংবাদমাধ্যমই। মিডিয়া ওয়াচ ডগ 'রিপোর্টার স্যানস ফ্রন্টিয়ার্স' যা 'রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার' নামেও পরিচিত, এমন একটি সংস্থা একটি সমীক্ষা চালিয়ে এমনই তথ্য তুলে ধরেছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে মিডিয়ার স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিসর অত্যন্ত কম। আগে যাও ছিল, বর্তমানে তা আরও সংকুচিত হয়েছে। বর্তমানে ভারতের স্থান বিশ্বে ১৪২ নম্বর। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ভারত ১৮০টি দেশের মধ্যে ছিল ১৩৩তম স্থানে, ২০১৭তে ১৩৬এ, ২০১৮তে ১৩৮এ। ১৯৯২ থেকে ২০১৬-এই ২৪ বছরে ভারতে ৭০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ন'জন সাংবাদিক খুন হযন।
২০১৭ সালে খুন হন উত্তরপ্রদেশের নবীন গুপ্তা, কর্নাটকের গৌরী লঙ্কেশ, ত্রিপুরার সুদীপ দত্ত ভৌমিক, শান্তনু ভৌমিক। দলিতদের পক্ষে দাঁড়ানো, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সমালোচনা করা, নারী স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করায় অনেকদিন ধরেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা গৌরী লঙ্কেশের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারাই তাঁকে গুলি করে খুন করে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সমালোচনা করলেই বিজেপি সমর্থকরা একটা ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করে তাঁকে রাষ্ট্রবিরোধী, দেশবিরোধী আখ্যা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংবাদিকদের নিজের হাতে বেঁধে রাখতে চান। কেউ সমালোচনা করলেই তাঁদের বিরুদ্ধে হেটস্পিচ শেয়ার করে দেওয়া হয় অনলাইনে।
রিপোর্টে আরও ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে যেদিন থেকে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, সেদিন থেকেই হিন্দু মৌলবাদীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করছেন। কোনও সাংবাদিকের যদি কোনও তদন্তমূলক রিপোর্ট প্রকাশ করেন বা হিন্দুত্ববাদের সমালোচনা করেন, তাহলে তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়। আর এই আক্রমণকারীদের একটা বড় অংশ প্রধানমন্ত্রীর ট্রল সেনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন