তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২১ মাসে আফগানিস্তানে নিহত হয়েছেন হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের রিপোর্টে।
মঙ্গলবার আফগানিস্তানের জাতিসংঘ মিশনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষমতার দখল নেয় তালিবান গোষ্ঠী। সেই আগস্ট মাস থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত গত ২১ মাসে সে দেশে ১০৯৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২৬৭৯ জন।
আফগানিস্তানের জাতিসংঘ মিশনের রিপোর্ট বলছে, প্রায় দুই দশকের যুদ্ধের পর ২০২১ সালের মাঝ আগস্টে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী ন্যাটো তাদের সেনাবাহিনী আফগানিস্তান থেকে তুলে নিলে দেশের প্রশাসনিক ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় তালিবানরা। কিন্তু তারপরেও আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থেকেই গিয়েছিল। বিশেষ করে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের রক্তচক্ষু সবসময়ই আফগানিস্তানের প্রতি নিবদ্ধ ছিল। সেই সূত্রে গত ২১ মাসে গোটা দেশে অসংখ্য প্রাণঘাতী বিস্ফোরণে ১ হাজার ৯৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বেশিরভাগ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও বাজারের মতো জনবহুল জায়গায়। এইসব বিস্ফোরণে মোট সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ আহত ও নিহত হয়েছেন। বেশিরভাগ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট।
তবে ইউএন-এর তথ্য বলছে, তালিবানরা ক্ষমতায় আসার আগে শুধুমাত্র ২০২০ সালেই সে দেশে ৩০৩৫ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিল। সেই তুলনায় গত ২১ মাসে নিহতের সংখ্যা অনেকটাই কম। আবার তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর দেশে আত্মহত্যার সংখ্যাও অনেক কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের রিপোর্ট।
এদিকে, তালিবান পরিচালিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তালিবানরা ক্ষমতায় আসার আগে কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ চলার কারণে দেশটি একটি দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপত্তা সমস্যায় ভুগেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। দেশের সুরক্ষার দিকে তাদের নজর রয়েছে। এমনকি দেশের নিরাপত্তা আরও মজবুত করতে গত কয়েকমাসের মধ্যে একাধিকবার ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন