ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)-এর বার্ষিক সূচকে আরও ৮ ধাপ নামলো ভারত। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে এই করাপশান পারসেপশন ইনডেক্স ২০২৩ (Corruption Perceptions Index 2023) অনুসারে ভারতের স্থান ৯৩। ওই রিপোর্ট অনুসারে বিভিন্ন মাপকাঠির ভিত্তিতে এবছর ভারতের প্রাপ্ত নম্বর ৪০ থেকে কমে হয়েছে ৩৯। গত ২০২২-এর সূচকে ভারতের স্থান ছিল ৮৫।
বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বার্ষিক সূচক তৈরি করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। মঙ্গলবার অর্থনৈতিক স্বচ্ছতার নিরিখে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৩ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট অনুসারে, দুর্নীতিমুক্ত দেশগুলির ধারেকাছে নেই ভারত। গত বছর ভারত ছিল ৮৫ তম স্থানে। ২০২১-এ ছিল ৮৬তম স্থানে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে।
২০২৩-এর সূচকে প্রথম পাঁচটি স্থানে আছে ডেনমার্ক (৯০), ফিনল্যান্ড (৮৭), নিউজিল্যান্ড (৮৫), নরওয়ে (৮৪) এবং সিঙ্গাপুর (৮৩)। তালিকায় নীচের দিক থেকে শেষ পাঁচটি স্থানে আছে যথাক্রমে সোমালিয়া (১১), ভেনেজুয়েলা (১৩), সিরিয়া (১৩), সাউথ সুদান (১৩) এবং ইয়েমেন (১৬)।
এই সূচক অনুসারে শেষ ১ বছরে ২৮টি দেশে দুর্নীতির হার কমেছে। ৩৪ টি দেশে দুর্নীতি বেড়েছে এবং ১১৮টি দেশ দুর্নীতির ক্ষেত্রে একই অবস্থায় আছে। টিআই প্রকাশিত সূচক (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স বা সিপিআই) অনুসারে ২০২৩-এ ১৮০টি দেশের মধ্যে ৫৫টি দেশের নম্বর গত বছরের তুলনায় বাড়লেও ৬৩টি দেশের নম্বর কমেছে এবং ৬২টি দেশের নম্বর অপরিবর্তিত রয়েছে। এই বছরেও বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ দেশের প্রাপ্ত নম্বর ৫০ এর নিচে।
কীভাবে ওই কমিটি রিপোর্ট তৈরি করে? অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশগুলির কাজের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়। সবথেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ পায় শূন্য। সবথেকে বেশি দুর্নীতিমুক্ত দেশ পায় ১০০ নম্বর। সেই মূল্যায়নে ভারত এবার পেয়েছে ৩৯ নম্বর।
টিআই তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন নেই। অবস্থা বিশেষ ভালো নয় ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিরও। তালিকায় এবার ২৪ নম্বর পেয়ে বাংলাদেশের স্থান ১৪৯ এবং ২৯ নম্বর পেয়ে পাকিস্তানের স্থান ১৩৩। এই সূচকে ৬৮ নম্বর পেয়ে ভুটান আছে ২৬ তম স্থানে। ৩৪ নম্বর পেয়ে শ্রীলঙ্কা আছে ১১৫ তম স্থানে এবং ২০ নম্বর পেয়ে মায়ানমার আছে ১৬২ তম স্থানে।
ভারত সম্পর্কে এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ভারতের ক্ষেত্রে (৩৯) নম্বর ওঠানামা যথেষ্ট কম হলেও কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের বিষয়ে কোনও দৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। নির্বাচনের আগে, ভারত নাগরিক অধিকারের জায়গা আরও সংকুচিত হতে দেখা গেছে, যার মধ্যে এক বিল পাসের মাধ্যমে "মৌলিক অধিকারের জন্য মারাত্মক হুমকি" হিসেবে দেখা দিতে পারে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন