মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য। কিন্তু, মাইনে বাড়েনি। যার জেরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেনে। ইতিমধ্যেই, রেলওয়ে কর্মীরা দেশজুড়ে একদিনের জন্য ‘ওয়াক আউট’ করেছে। সেই রেশ না কাটতে শনিবার থেকে ধর্মঘটে নামছে লন্ডনের ‘টিউব রেলওয়ের’ কর্মীরা। ফলে- আবার ধমকে যেতে চলছে ব্রিটেনের যান চলাচলের গতি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির জেরে, চরম সংকটে পড়েছেন ব্রিটেনের সাধারণ মানুষ। সেই তালিকার রয়েছেন রেলওয়ের সাফাই কর্মী, সিগন্যালার, রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মী।
লন্ডনের পরিবহন দপ্তরের (TFL) পক্ষ থেকে জানান হয়েছে - রেল, মেরিটাইম এবং ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের সদস্যদের চাকরি, বেতন এবং পেনশন নিয়ে ধর্মঘটের কারণে লন্ডনের বেশিরভাগ টিউব লাইনে কোনও পাতাল রেল চলাচল করবে না। TFL-এর গ্রাহক অপারেশন ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ‘দিনটি কঠিন হতে যাচ্ছে। আমরা জনগণকে টিউব রেল ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার, ব্রিটেনে রেলওয়ে কর্মীদের ধর্মঘটের জেরে প্রায় থমকে গিয়েছিল জনজীবন। ২৪ ঘন্টা ওয়াক আউটের সময় মাত্র এক পঞ্চমাংশ ট্রেন চলাচল করেছিল।
বর্তমানে, ব্রিটেনে ট্রেন কোম্পানিগুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তবে, এই কোম্পানিগুলির কাজে ব্রিটেনের রক্ষণশীল সরকার হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করেছে রেল ইউনিয়নগুলি। তাঁরা জানিয়েছে, এই প্রভাবের জেরে বঞ্চিত হচ্ছে রেল কর্মীরা। অন্যদিকে, এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সরকার।
লন্ডনের পরিবহণ সচিব গ্রান্ট শ্যাপস (Grant Shapps) বলেন, ‘ইউনিয়নগুলির এই পদক্ষেপ আসলে জনগণকে ‘মুখে লাথি’ মারার সমান। রেলওয়েকে ঘুরে দাঁড়াতে ১৬ বিলিয়ন পাউন্ড দিয়েছি আমরা। কিন্তু, তারপরেও কেউ ধর্মঘটে যেতে চাইলে যেতে পারে।’
জানা যাচ্ছে, কয়েক দশকের মধ্যে এখন সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে ব্রিটেন। দেশের মানুষের জীবনযাত্রা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। যার জেরে, ব্রিটেনে বেসরকারি বিভাগ ছাড়াও সরকারি বিভাগের ইউনিয়নগুলি ধর্মঘটের পরিকল্পনা করছে। ডাককর্মী, আইনজীবী, ব্রিটিশ টেলিকম কর্মী এবং বন্দর কর্মীরা- সকলেই এই মাসের শেষে ওয়াকআউট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে ১১ দিনের ধর্মঘট শুরু করেছেন স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গের সাফাই কর্মীরা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এডিনবার্গ ফ্রিঞ্জ এবং অন্যান্য শিল্প উত্সবে বহু পর্যটক শহরে আসবেন। কিন্তু, সাফাই কর্মীদের ধর্মঘটের জেরে শহরের রাস্তায় আবর্জনার স্তুপ জমা হবে৷
জুলাই মাসের শেষে ব্রিটেনে মুদ্রাস্ফীতি ১০.১ শতাংশে পৌঁছেছে। এই রেকর্ড ব্রিটেনের গত ৪০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরই মাঝে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষের দিকে এই মন্দার হার ১৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন